এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল আবারও প্লাবিত হয়েছে। রেকর্ড বন্যায় ডুবেছে সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ অঞ্চল। টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সুরমা আর কুশিয়ার কূল উপচে সিলেট আর সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ৯০ শতাংশেরও বেশি প্লাবিত সুনামগঞ্জের সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে সারা দেশের যোগাযোগ। বিভাগের অন্যান্য জেলার সঙ্গেও যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে ও দুর্ঘটনা এড়াতে পুরো সিলেটের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সিলেট বিভাগ কার্যত সারা দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দুই জেলার কিছু উঁচু স্থান ও পাহাড়ি এলাকা ছাড়া সবখানে এখন পানি। সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ করা হয়েছে উড়োজাহাজ ওঠানামাসহ সব ধরনের কার্যক্রম। জেলা দুটির বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তাদের উদ্ধারে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। তবে টানা বর্ষণ ও মোবাইল-ইন্টারনেট সেবাও বিঘ্নিত হওয়ায় তথ্য প্রাপ্তি, উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। বিভাগের বাকি দুই জেলার নিচু এলাকায়ও ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। হবিগঞ্জে একটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে উত্তরের কয়েকটি জেলায়ও দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য ও দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যমতে, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, সোমেশ্বর ও কংস নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, শেরপর, নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা। এসব এলাকায় ৫ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পদ্মা-যমুনার পানি বাড়ায় বন্যার ঝুঁকিতে আছে গাইবান্ধা, বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও শরীয়তপুরের নিচু এলাকা।