বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত সিলেট জনপদের রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস। আধুনিক কালে এটা সবসময়ই বাংলার অন্তর্গত ছিল, যদিও বঙ্গভঙ্গের কারণে স্বল্প সময়ের জন্য সিলেট আসামের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিল। অবশ্য ভারত ভাগের সময় সিলেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ করিমগঞ্জ ভারতের আসাম প্রদেশের অধীনে রয়ে যায়।
শিক্ষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, নান্দনিক শোভাসহ সব দিক থেকেই সিলেট ছিল অনন্য। দুঃখজনকভাবে ১৯৬০ দশক থেকে সিলেট, বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে। ইউনিসেফ প্রকাশিত ২০১০ সালের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাকে ‘বঞ্চনার’ (Composite deprivation index) নিরিখে ভাগ করে। তাদের সংজ্ঞা অনুসারে বাংলাদেশে যে আটটি জেলা ‘সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত’, তার দুটোই (অর্থাৎ সিকি ভাগ) সিলেট বিভাগে। অর্থাৎ দেশের জনসংখ্যার সাত ভাগেরও কম মানুষ যে সিলেটে বসবাস করে, সেখানকার অর্ধেক এলাকা বঞ্চনার শিকার। নিম্নোক্ত ছকের মাধ্যমে সিলেটের বর্তমান উন্নয়ন সংকট আরো সহজভাবে বোঝা যাবে। এখানে উন্নয়নের বিভিন্ন গড় সূচকে বাংলাদেশের তুলনায় সিলেটের অবস্থান দেখানো হয়েছে। মানবিক উন্নয়নের প্রায় সব সূচকেই সিলেট বেশ পিছিয়ে আছে। একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম হলো কন্যাবিবাহের হারে, যেখানে সিলেটের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো।