১৯০৫ সালে লেখা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের মতোই ৪২ বছর আগে দেশে ফিরেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তিনি স্ব-ভূমে ফিরতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। আপনজন চলে গেছে, পথে আঁধার আছে– তাতে কী! সব ভয়-সংশয় ভুলে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে দেশে এসেছিলেন বঙ্গকন্যা। ১৯৮১ সালের ১১ মে বিশ্বখ্যাত নিউজউইক পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “জীবনের ঝুঁকি আছে এটা জেনেই আমি বাংলাদেশে যাচ্ছি।” তিনি এ-ও বলেছিলেন, “জীবনে ঝুঁকি নিতেই হয়। মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ত্ব থেকে বঞ্চিত হয়।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর টানা কয়েক বছর জাতি হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। জাতিকে যখন আশা দেয়ার মতো কেউ ছিল না, ঠিক তখনই ভরসাস্থল হয়ে ক্ষত পূরণের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তারিখটা ছিল ১৭ মে ১৯৮১, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩৮৮। রবিবার। রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্ষমতায় তখন খুনী মোশতাকের সহচর জেনারেল জিয়া। তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে আশার সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন। যদিও দেশের মাটিতে পা রাখার আগেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।