‘শুট অ্যাট সাইট’ বা দেখামাত্র গুলি– এমন আদেশ দিয়েও বিক্ষোভ যখন দমাতে পারছে না তখন সেখানকার বিক্ষোভকারীদের মনোভাব অনেকটা ‘সিংক অর সুইম’। আর্থিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করার পর থেকে সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। জ্বলছে গোটা দ্বীপরাষ্ট্র। কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এখন জনরোষ সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত সেনা শাসনের রাস্তায় হেঁটেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। হিংসা বা সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করতে দেখলেই গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে আটক এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি-গাড়িতে তল্লাশি চালানোর ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে সেনার হাতে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়া শান্তি ফিরে আসে কিনা।
চরম অপমানিত শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও এমপিরা, সরকার পক্ষের লোকদের নানা ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। এমনকি সরকার পক্ষের সাংবাদিকরাও জনরোষ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এসব দেখে বাংলাদেশের অনেকেই উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন এবং ভাবছেন তারাও তাদের প্রতিপক্ষের এমন একটা দশা করতে পারবেন। এই গ্রুপটি আফগানিস্তানে তালেবানের আগমনেও ভয়ার্ত মানুষের দেশ পালানোয় এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিল। ফলে বোঝা যাচ্ছে না এদের আদর্শ কী। তালেবান নাকি চরম স্বৈরাচার রাজাপাকসে?
বাংলাদেশে যদি শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বর্তমানে ক্ষমতাসীনদের বিরোধীরা খুশি হবেন। কিন্তু তাদের জেনে রাখা ভালো যে কোথাও কোথাও জনতা শ্রীলঙ্কার বিরোধী রাজনীতিকদেরও হামলা করেছে যে, এরাও জনগণের কথা বলেনি। সুতরাং ক্ষুব্ধ জনতার উচ্ছৃঙ্খল আচরণে এই উচ্ছ্বসিত গ্রুপটির খুশির কারণ দেখি না। দেশকে যদি তারা ভালোবাসেন তাহলে বাস্তব চিন্তা করাই শ্রেয়।