অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এ নিয়ে রাজধানী কলম্বোয় সম্প্রতি বৈঠকে বসেছিল দুই পক্ষ। অবশেষে আইএমএফের পক্ষ থেকে সহায়তার বিষয়ে সবুজ সংকেত এসেছে। সংস্থাটি আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছে, অর্থনীতি পুনর্গঠনে শ্রীলঙ্কাকে ২৯০ কোটি ডলার সহায়তা (বেলআউট) দেবে তারা।
অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার শ্রীলঙ্কায় ডলারের অভাবে অতি জরুরি পণ্যও আমদানি করা যাচ্ছে না। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের অভাবে হাহাকার দেখা দিয়েছে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বাড়তি ভোগান্তি ডেকে এনেছে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্নতা। সংকট আরও গভীর হয়েছে ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বিদেশ ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা সরকার ব্যর্থ হওয়ায়। এ পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে।
নড়বড়ে অর্থনীতির ধাক্কায় টালমাটাল শ্রীলঙ্কার রাজনীতিও। অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দেশটিতে সে সময় ক্ষমতাসীন রাজাপক্ষে পরিবার দায়ী বলে মনে করেন সাধারণ জনগণ। রাজাপক্ষে পরিবারকে সরকার থেকে হটাতে রাস্তায় নামেন লোকজন। গণবিক্ষোভের মুখে গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। পরে সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে বৈঠকের ৯ দিন পর গতকাল এক বিবৃতিতে বেলআউট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আইএমএফ। এখন সংস্থাটির বোর্ড সদস্যদের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এটি। শ্রীলঙ্কা একটি বড় সংকট মোকাবিলা করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বেলআউটের অর্থ হাতে পেতে শ্রীলঙ্কাকে আইএমএফের কিছু শর্তও মেনে নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে আগে নেওয়া ঋণ পরিশোধের নিয়মনীতি পরিবর্তনে দাতাদের সঙ্গে নতুনভাবে চুক্তিতে যেতে হবে শ্রীলঙ্কা সরকারকে।
পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং ঋণ পরিশোধে সহায়তা করতে শ্রীলঙ্কার পাশে ঋণদাতাদের দাঁড়ানো জরুরি বলে মনে করেন আইএমএফের কর্মকর্তা পিটার ব্রিউয়ার। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, নিজের স্বার্থেই এখন সব ঋণদাতাকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তারা যদি এই নিশ্চয়তা দিতে না চায়, তাহলে শ্রীলঙ্কায় সংকট আরও গভীর হবে, আর দেশটির ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আরও কমে যাবে।