সংযোগ সড়কের অভাবে নির্মাণের পর থেকে অকেজো পড়েছিল সেতুটি। এর ওপর দিয়ে যানবাহন তো দূরে থাক, মানুষও চলাচল করেনি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে আক্ষেপ ছিল, ৩০ লাখ টাকার সেতু কাজে এল না! সেই আক্ষেপ খানিকটা ঘুচিয়েছেন জলমহাল ইজারাদারেরা। পাহারার জন্য সেতুর ওপর ঘর বানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। চলাচলের জন্য না হোক, অন্তত পাহারার কাজে লাগছে সেতুটি। এটি এখন এলাকার লোকজনের মনে সান্ত্বনা।
সেতুর ওপর টিনের এই ঘরের খোঁজ মিলেছে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের ফরিদপুর এলাকায়। ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা কলেজছাত্র তরিকুল মিয়া ঠাট্টাচ্ছলে বলছিলেন, ‘সেতুটি মানুষের চলাচলের কাজে না এলেও জলমহালের লোকজনের পাহারার কাজে আসছে, এটা কম কী!’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেপসিয়া বাজার থেকে ফরিদপুর হয়ে জগন্নাথপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার মাটির ডুবো সড়ক রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক দিয়ে শুকনা মৌসুমে প্রতিদিন লেপসিয়া, ফতুয়া, ফরিদপুর, রাশিদপুর, চাকুয়া, জগন্নাথপুরসহ আশপাশের অন্তত ১২টি গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ চলাচল করে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সড়কের ফরিদপুর এলাকায় জলমহালসংলগ্ন খালের ওপর একটি উঁচু পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। ৩৮ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। হাবিব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মাণের পর থেকে সেতুটির ওপর দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করেনি। চার বছর ধরে সেতুর দুই-তৃতীয়াংশজুড়ে একটি টিনের ঘর তৈরি করে সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফরিদপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা নেওয়া জলমহালের লোকজন ঘরটি তৈরি করে ব্যবহার করছেন।