ঈদ এলেই প্রিয়জনদের টানে গ্রামে ছুটে যায় রাজধানীর বেশির ভাগ মানুষ। সরগরম ঢাকা তাই অনেকেটাই ফাঁকা হয়ে যায়। লম্বা ছুটিতে নগর ছাড়লেও তালাবদ্ধ বাসায় মূল্যবান জিনিসপত্র রেখে যেতে বাধ্য হন অনেকেই। এই সুযোগে বেপরোয়া হয়ে ওঠে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। দরজার তালা ভেঙে কিংবা গ্রিল কেটে প্রশিক্ষিত পেশাদার চোরেরা হানা দেয় বাসায় বাসায়। লুটে নেয় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরে তছনছ বাসা দেখে মুহূর্তেই অনেক পরিবারের আনন্দ পরিণত হয় বিষাদে। পুলিশেরও ব্যর্থতার গ্লানি শুনতে হয়।
তবে এমন বিষাদের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য এবার বাসা বাড়িতে চুরি, দস্যুতাসহ নানা ধরনের অপরাধ ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আবাসিক এলাকার নিরাপত্তায় থানা পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডিএমপির পক্ষ থেকে মাঠ পুলিশের সব ইউনিটকে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দফতরে পুলিশের সব ক্রাইম জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-কমিশনারদের নিয়ে এক বিশেষ বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানতে চাইলে বৈঠকের কথা স্বীকার করে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আবাসিক এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। কেন্দ্রীয়ভাবে মোতায়েন করা হবে পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য। আবাসিক এলাকার নৈশপ্রহরী ও ভবনগুলোর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীদের ইতোমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য। ঈদের ছুটিতে বাসা-বাড়িতে চুরি দস্যুতা বন্ধে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে এরই মধ্যে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। শুক্রবার থেকেই মূলত ঘরেফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে। সেই সঙ্গে খালি হচ্ছে পাড়া-মহল্লার জনসমাগম। আর এতেই বাড়ছে বাসা-বাড়িতে চুরির শঙ্কা। প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে অনেক বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টার্গেটকৃত বাসার দরজার তালা ভেঙে কিংবা গ্রিল কেটে হানা দেয় পেশাদার চোরের দল। অতীতে এমন চুরির ঘটনা তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঈদের ছুটির ফাঁকে এমন চুরির অনেক ঘটনায় গৃহপরিচারিকা ও দারোয়ানরা তথ্যদাতা হিসাবে কাজ করে। বিষয়টি মাথায় রেখে এবার নগরীর আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি আবাসিক এলাকার নাইট গার্ড ও বাসার নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর গোপন নজরদারি করবে পুলিশ।