ঢাকার উত্তরায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বেহাত হওয়া ২৪টি প্লট উদ্ধারে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। দখলদাররা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ফলে তাদের প্রভাবের মুখে থেমে যায় উচ্ছেদের সব তৎপরতা। হাতছাড়া হওয়া সরকারি এই প্লটগুলোর বাজার মূল্য অন্তত ৪৫০ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন ধরে এসব প্লট দখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে চক্রের সদস্যরা। মাসে এ খাত থেকে ভাড়া তোলা হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। বছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ছয় কোটি। ভাড়ার বাইরেও এসব প্লটে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবসায়ীদের গুনতে হয় নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা। স্থানীয় মাস্তান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য নিত্যদিন এখান থেকে চাঁদা তোলেন। সবার চোখের সামনে সরকারি সম্পত্তি দখল বাণিজ্যের এই উৎসব চললেও কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। দখল বাণিজ্যের সঙ্গে রাজউকের অসাধু কর্মকর্তারাও জড়িত বলে অভিযোগ আছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজউক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্লট দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘উচ্ছেদ করলে ফের দখল হয়ে যায়। তাই এ সপ্তাহের মধ্যেই আমরা নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব। নিলামে অংশ নিয়ে যারা প্লট পাবেন দখলমুক্ত করে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এ সপ্তাহেই পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। দখলদাররা যত প্রভাবশালী হোক তাদের এবার উচ্ছেদ করা হবেই। দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাজউক কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজউক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজউকের অধীনে উত্তরা দ্বিতীয় প্রকল্পের আসাসিক প্লটগুলোর বরাদ্দ শেষ হয় ২০০৫ সালে। এরপর ১৭ বছর পার হলেও সংস্থাটি সব বাণিজ্যিক প্লট নিলাম করে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা করতে পারেনি। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী উত্তরা দ্বিতীয় প্রকল্পের বাণিজ্যিক প্লটের প্রতি কাঠার দাম অন্তত ৩ কোটি টাকা।