বাঁশের ছোট্র একটি যন্ত্র। এতে লম্বা আড়াআড়িভাবে লাগানো হয়েছে পাটের সুতো। পাশেই দেখা গেল সাদা ও রঙিণ সুতো। একজন নারী বাঁশের যন্ত্রের ওপর থাকা পাটের সুতোর ভেতরে উলের সুতো ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই তৈরি হচ্ছে শতরঞ্জি। সোনারগাঁও থেকে আসা হোসনে আরার কারুশিল্পী স্টলের এই দৃশ্য।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আরও অনেক কারুশিল্পীরা কাজ করছিলেন। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন ( বিসিক ) ও বাংলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে বসেছে “বৈশাখী মেলা ১৪২৯“। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন বিক্রেতারা। তাঁদের বেশিরভাগ পণ্যই হাতে তৈরি। প্রথম দিন মেলা জমজমাট থাকলেও নববর্ষের পরদিন থেকে আর তেমন ক্রেতা-দর্শণার্থী নেই। বিক্রেতাদের চোখে মুখে তাই হতাশার ছাপ।
মাইকে প্রতিধ্বনি হচ্ছে নববর্ষ ১৪২৯ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১৪ দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এই মেলায় বাংলাদেশের প্রায় বিলুপ্ত সকল লোকজ ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। ছোটদের জন্য পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, ভূতের বাড়ি, নৌকা, হানিসিং ও নাগরদোলা রয়েছে। এছাড়াও মেলায় বসেছে সখের হাড়ি, রঙ-বেরঙের মাটির পুতুল, নকশীকাঁথা, হাতপাখা, তীর-ধনুক, শঙ্খ, কাঁসার তৈজসপত্র ও খাবারের দোকান।
এ বৈশাখী মেলায় যেন আবহমান বাংলার গ্রামীণ উৎসবের চিরায়ত রূপে ফুটে উঠেছে। কিন্তু চারপাশে নীরবতায় যেন সবকিছু থেমে আছে। বাংলা একাডেমির গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা রাজশাহী থেকে আসা বায়োস্কোপ দেখানো আব্দুল জলিল মণ্ডলের সাথে। তার সাথে কথা বলতে চাইতেই সে কান্নাতে ভেঙ্গে পড়েন।