ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনাসহ দেশের ৩৩টি নদীর পানি বাড়ছে। একে একে সারিঘাট, গোয়াইনঘাট, সুরমা, ধনু নদ ও খালিয়াজুরির হাওরের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে গেছে। এতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনায় বন্যা হতে পারে। বৈশাখের আগমন ধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি। কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচলে হচ্ছে ভারী বৃষ্টি। সিলেটও মাঝারি বৃষ্টি চলছে।
দেশের ৩৯টি নদ-নদীর পানি পর্যবেক্ষণ করে সরকারের বন্যা পূর্বাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ৩৩টি নদীর পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ৯১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল শনিবার থেকে ৫ দশমিক ১০ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার ধনু নদে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতে চার জেলায় নদনদীর পানি আরও কিছু স্থানে দ্রুত বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার বিশেষ সতর্কতার পূর্বাভাস দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বন্যার ঝুঁকির মধ্যে থাকা বোরো ধান ৮০ শতাংশ পাকলে দ্রুত সংগ্রহের পরামর্শ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মো. শাহ কামাল।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, হাওরে বন্যা হবে এটা অনেকটা নিশ্চিত। তবে উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঠিকমতো কাজ করলে আপাতত কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে বন্যার আশঙ্কা নেই।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।