বাংলাদেশে পৌনে তিন কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। দেশে জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশই শিশু এবং এদের মধ্যে সাড়ে ৬ শতাংশই কিডনি সমস্যায় ভুগছে। এছাড়া দেশের ৭০ ভাগ মানুষ জানেন না তারা কিডনি রোগে আক্রান্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে প্রায় আড়াই থেকে পৌনে তিন কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। এদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯-১০ লাখ। প্রতিবছর আবার প্রায় দুই লাখ নতুন রোগী যোগ হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় ৯০ ভাগ রোগীই তা বহন করতে পারছে না। বছরে ৪০ হাজারের বেশি এ রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। এর বিস্তার যে কেবল বাংলাদেশেই তা নয়।
সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রতি ১০ জনের একজনই কিডনি রোগে ভুগছেন। দেশে এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাও করুণ। ২০০১ সালে জাতীয় কিডনি ইন্সটিটিউটের যাত্রা শুরু হলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৩৬টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আজ জাতীয় কিডনি দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কিডনি হেলথ ফর অল অর্থাৎ সবার জন্য সুস্থ কিডনি।’
এ উপলক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশে কিডনি রোগী ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। মগববাজারে বেসরকারি ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় তিন হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শ্যামলীতে বেসরকারি সিকেডি হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম এক হাজার ৫০টির মতো প্রতিস্থাপন করেছেন। করোনা শুরুর আগে বিএসএমএমইউতে সপ্তাহে একটা করে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছিল। এর বাইরে বেসরকারিভাবে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন, অ্যাপোলো, এভারকেয়ারসহ দেশে সাত থেকে আটটি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। সেই দিক থেকে বিশাল ভবন নির্মাণ করে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও জাতীয় কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা বেশ করুণ।