দেখে মনে হয়, ডালে ডালে ফুটে আছে যেন নরম তুলতুলে দুধসাদা ফুল। আসলে ওগুলো তুলার ফুটন্ত বল। বরেন্দ্রর ঢেউখেলানো জমির তুলাখেতগুলোতে এখন এমন তুলার শুভ্রতা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারাই যায় না। দুপুর গড়িয়ে বিকেল মাত্র শুরু হয়েছে। শীতের মিষ্টি রোদ গায়ে মেখে হাঁটছিলাম বরেন্দ্রর উঁচু–নিচু থাক থাক জমির আলপথ ধরে। গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের বড় দাদপুর মৌজার দিকে।
লক্ষ্য আমাদের প্রায় এক কিলোমিটার দূরের তুলাখেত। একসঙ্গে ১৭ বিঘা। হাঁটতে হাঁটতে ক্রমে আমরা নিচের দিকে নামছি। কোথাও বোরো জমি তৈরির প্রস্তুতি চলছে। কোথাও চষা জমিতে দেওয়া হচ্ছে সেচের পানি। ধান রোপণের আগে জমি সমতল করতে ঘোরানো হচ্ছে মই। মইয়ের ওপর ওজন হিসাবে চাপানো হয়েছে বরেন্দ্রর শক্ত মাটির বড় ঢ্যালা। অনেকটা বোল্ডার পাথরের মতো। দুই প্রান্তে বাঁধা রশির মধ্যখানে ধরে টানছেন এক চাষি।
এসব পার হয়ে এক দল মেয়ের ওপর আটকে গেল চোখ, গাছ থেকে তুলা তুলছে ওরা। চা–বাগানে মেয়েদের চা তোলার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পার্থক্য শুধু ওদের পিঠে ঝুড়ি নেই। চা–গাছের উচ্চতার মতো গাছের বিভিন্ন শাখা থেকে শ্বেত-শুভ্র তুলার বলগুলো এক হাতে বোঁটা থেকে টুপ টুপ করে তুলছে, আর অন্য হাতে ধরা বস্তায় পড়ছে।