আহমদ রফিক ভাষাসংগ্রামী, প্রাবন্ধিক, রবীন্দ্র-গবেষক। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার করে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির হলে বছর দেড়েক পর ৩০ মে ১৯৫৪ আদালতের নির্দেশে ছাত্রত্ব ফিরে পান। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রগামী সহযাত্রী আহমদ রফিকের বয়স এখন ৯৩ বছর। এই বয়সেও নিয়মিত লিখছেন। ভাষা আন্দোলনের নানা দিক নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দৈনিক আমাদের সময়ের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রণজিৎ সরকার
আমাদের সময় : আপনি ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সে অভিজ্ঞতাটা যদি বলতেন। আপনার সঙ্গে তখন কারা কারা ছিলেন? তাদের সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম জানতে চায়।
আহমদ রফিক : ঢাকায় ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে আন্দোলন একুশে নামে পরিচিত তাতে আমার সার্বিক অংশগ্রহণ। এর আগে ১৯৫০-এ মূলনীতি কমিটির বিরুদ্ধে মূলত রাজনীতিকদের যে আন্দোলন তাতে ছাত্রদেরও অংশগ্রহণ ছিল। আমিও তাতে যোগ দিই। মনে পড়ে, নবাবপুর রোড ধরে মিছিলে হাঁটছি কালো শেরোয়ানি ও চুড়িদার পাঞ্জাবি পরা আতাউর রহমান খানের পেছনে। বার লাইব্রেরির সভায়ও যোগ দিয়েছি। একুশের মূল কাজ ছিল মেডিক্যাল ছাত্রদের সংগঠিত করা এবং এফএইচ (ফজলুল হক) হল ও ঢাকা হলের সংগ্রামী বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা। তাদের মধ্যে সহযোদ্ধা গাজীউল হক, আনোয়ারুল হক খান, মোশাররফ হোসেন, জিল্লুর রহমান, দেবপ্রিয় বড়–য়া, মৃণাল দস্তিদার প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। তাদের সঙ্গে দিনের পর দিন মিছিলে হেঁটেছি, স্লোগান দিয়েছি। এ ছাড়া ছিলেন মোহাম্মদ সুলতান, হাবিবুর রহমান শেলী প্রমুখ। আর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন আলী আজমল, মঞ্জুর হোসেন, মোহাম্মদ জাহেদ, আবদুস সালাম হুমায়ুন হাই, সাঈদ হায়দার, মোজাম্মেল হোসেন, মশরাফ হোসেন, ফজলে রাব্বিসহ অনেক নাম। উল্লেখ করতে গেলে আশরাফদের কথা ভুলি কীভাবে।