বিধান কুমার ভান্ডার। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক (ডিজি)। তার নামের অংশে 'বিধান' থাকলেও প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে মানেননি অনেক নিয়ম বা বিধান। নামের আরেক অংশ 'কুমার'-এর যথার্থতা দেখিয়েছেন তিনি। বাংলা অভিধানে 'কুমার' শব্দের অর্থ যুবরাজ। এখন সরকারি এই সাবেক কর্মকর্তা হয়েছেন বিত্তবৈভবের 'যুবরাজ'! বিধান কুমারের গ্রামের বাড়ি খুলনা। সেখানেই তার সম্পদের ভান্ডার।
খুলনার মুজগুন্নি আবাসিক এলাকায় রয়েছে বিধান কুমারের নামে সাত তলা ভবন। জমিসহ সেটির আনুমানিক দাম সাড়ে তিন কোটি টাকা। এ ছাড়াও সমকাল অনুসন্ধান চালিয়ে খুলনা নগরে তিনটি প্লটে তার ২৭ কাঠা জমির হদিস পেয়েছে। এসব জমির বর্তমান বাজারদর দেড় কোটি টাকা। পাশাপাশি চিকিৎসক ছেলের নামে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে নির্মাণ করছেন সাত তলার অত্যাধুনিক জেনারেল হাসপাতাল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, চাকরিজীবনে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়নের দায়িত্বে থেকে বিধান কুমার করেছেন নিজের পকেট উন্নয়ন। তার বিরুদ্ধে মৃত্তিকাবিষয়ক নির্দেশিকা ছাপানোয় দুর্নীতি, অবৈধ উপায়ে প্রকল্প পরিচালক হওয়া, ক্রয়নীতি না মেনে কেনাকাটায় অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা সাবেক এই ডিজির নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কৃষি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
তিন গাড়ি বরাদ্দ :বিধান কুমার ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পান। গত ৩০ জানুয়ারি তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। এর পরও তিনি সরকারি একটি গাড়ি ব্যবহার করে যাচ্ছেন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে। ভারপ্রাপ্ত ডিজি থাকা অবস্থায় নিয়ম না থাকলেও তিনি তিনটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-০১১৬, ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-১০৪৫ এবং ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৭৮৪৬) বরাদ্দ নিয়েছিলেন। দুটি গাড়ি তার স্বজনরা ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ ছিল। চাকরি ছাড়ার পর তিনটি গাড়ি কাগজে-কলমে জমা দিলেও ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৭৮৪৬ নম্বর গাড়িটিতে এখনও তিনি মাঝেমধ্যে চড়েন। ওই গাড়ির চালক জালাল বলেন, 'বিধান স্যারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। সচিবালয়ে অফিসের গাড়ি ছাড়া ঢোকা যায় না। তাই সচিবালয়ে যাওয়ার সময় কয়েক দিন স্যারকে গাড়িতে নিয়ে গেছি।'