কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পানির ফোয়ারার পুব দিকে লামার বাজার সড়ক দিয়ে ১০০ গজ এগোলেই বাঁ পাশে প্রায় জরাজীর্ণ একটি দোতলা বাড়ি। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ভাঙাচোরা দরজা, জানালার কাচ ভাঙা। দেয়ালের রং বিবর্ণ। বাড়িটির দোতলার বসার ঘরের চার দেয়ালে মার্কার কলমে লেখা, ‘মানুষ মানুষকে গুলি করে মারে।’ ‘নির্দোষ মানুষ কেন মরে?’ ‘ভূতকে ভয় লাগে না, মানুষকে ভয় লাগে।’ ‘আব্বু তুমি কোথায়?’ ‘তুমি কি আর জীবিত ফিরে আসবা না।’ ‘আমাদের আব্বু হত্যার কি কোনো বিচার পাব না?’ ‘আব্বু তুমি কেন নাই।’ ‘আব্বু তুমি কখন আসবা। প্লিজ চলে আস।’
কথাগুলো লিখেছে গতবার এসএসসি পাস করা তাহিয়াত হক ও তার ছোট বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী নাহিয়ান হক। গত সাড়ে তিন বছরেও এসব লেখার কোনো জবাব পায়নি দুই বোন।
২০১৮ সালের ২৬ মে রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ হন তাহিয়াত ও নাহিয়ানের বাবা একরামুল হক। ঘটনার সময় তিনি টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। ১২ বছর ছিলেন টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। ‘হত্যাকাণ্ড’টি ঘটার সময় মেয়েদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন শোনা যায় ফোনে থেকে যাওয়া রেকর্ডে। একরামের প্যান্টের পকেটে থাকা ফোনে মেয়ে ফোন করলে চাপ পড়ে রিসিভ হয়ে যায়। একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগমের মুঠোফোনে রেকর্ড হয়ে যায় গুলির শব্দ, শোরগোল। এই অডিও ভাইরাল হলে ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে।