একনায়কদের জীবনে একসময় সবচেয়ে বড় যে সমস্যা দেখা দেয়, সেটা হলো এক্সিট স্ট্র্যাটেজি বা সহজ বাংলায়—প্রয়োজন দেখা দিলে পালিয়ে যাওয়ার পথ খোলা রাখা। আর এ কারণেই বিভিন্ন সময় দেশে দেশে এদের দেখা গেছে, একদল পোষ্যের হাতে বিরোধীদের মেরেকেটে ঠান্ডা রাখার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া। অন্যদিকে নিজের পরিবারের কোনো সদস্য বা একান্ত বসংবদ কারও হাতে যেন ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়, তা নিশ্চিত করে নেওয়া। এমনটা করা গেলে এক্সিট স্ট্র্যাটেজি ষোলোকলায় পূর্ণ হয়ে যায় বলে এরা ধরে নেন। আর সেই পথ ধরেই লুটপাটের ঢালাও লাইসেন্স মিলে যায় বলে একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় একদিকে যেমন নিরাপত্তা বাহিনীগুলো স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের দেখা যায়, লাগামহীন দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে নিতে।
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এ রকম পটভূমি নিয়ে লিখেছিলেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘বৃদ্ধ দলপতির শরৎ’। উপন্যাসে দলপতির নাম উল্লেখ না থাকলেও আমাদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না গল্পের পেছনে যে বাস্তব জীবন, কার কথা সেখানে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সেই চরিত্র হতে পারে প্যারাগুয়ের আলফ্রেডো স্ট্রয়েসনার, ডোমিনিকার রাফায়েল ত্রুখিলো, হাইতির পাপা ডক কিংবা নিকারাগুয়ার আনাস্তাসিও সামোজা। নাম এবং দেশ এদের ভিন্ন হলেও কর্মে এদের ছিল না কোনো ভিন্নতা।