সাংগঠনিক সক্ষমতা, প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনী অতীত পরিসংখ্যান সবকিছুতেই এগিয়ে আওয়ামী লীগ। তবুও ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে নিজেদেরই শরিক দল জাপা’র প্রার্থী। যদিও সুবিশাল নয় তাদের ভোটব্যাংক। তবে ভোটের মাঠে না থাকা বিএনপি অনুসারীদের নৌকার বিপক্ষে ভোট পাল্টে দিতে পারে পরিসংখ্যানের ইতিহাস। তাই ভোটের লড়াই মূলত আওয়ামী লীগ ও জাপা প্রার্থীর মধ্যে হলেও বিএনপি অনুসারীদের ভোটই যেন ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী পরিসংখান থেকে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ বার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, ৪ বার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও ২ বার জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করে। তবে সর্বশেষ গত ৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি ধরে রাখে। এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত গোলাম নওজব চৌধুরী (হাতুরী), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি মনোনীত রুপা রায় চৌধুরী (ডাব) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন জাপা’র সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম নুরু (মোটরগাড়ি)। এদিকে, প্রথমবারের মতো এই নির্বাচনী আসনে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নতুন এই ভোট প্রক্রিয়ার বিষয়ে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। কোনো কোনো ভোটার ইভিএম নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ আবার অনীহাও প্রকাশ করেছেন। অবশ্য নির্বাচন কমিশন ইভিএম সম্পর্কে ধারণা দিতে ১৪ই জানুয়ারি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের মহড়া করেছে। তবে খুব বেশি মানুষ এতে আগ্রহ দেখায়নি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ক প্রচারণার ব্যাপক ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে। সরজমিন নির্বাচনের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সভা-সমাবেশ কিংবা জনসংযোগের মতো কার্যক্রমে ৫ প্রার্থীর মধ্যে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও জাপা মনোনীত প্রার্থী প্রচুর সময় দিয়েছেন। কিন্তু সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এই ভোট নিয়ে তেমন একটা আমেজ লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে আজকে ভোটার উপস্থিতি অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ বলেন, মির্জাপুরের চলমান উন্নয়ন ও প্রয়াত এমপি একাব্বর হোসেনের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে মানুষ নৌকাকেই বেছে নিবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন।জাতীয় পার্টি মনোনীত জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ দাবি করে মানুষ লাঙ্গল প্রতীকেই আস্থা রাখবেন এবং তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নির্বাচনী এই আসনে নারী-পুরুষসহ মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৯ জন। যার মধ্যে ৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এইচএম কামরুল হাসান বলেন, ভোটের মাঠে ৪ প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ-র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্য থাকবেন। এছাড়া ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকবেন। টাঙ্গাইল-৭ নির্বাচনী আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আশা করছি একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট উপহার দিতে পারবো।