সাকরাই উৎসব। একে মূলত পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বলে। বাংলা বর্ষের নবম মাস পৌষের শেষ দিন এই উৎসব পালন করা হয়। শুধু বাংলাদেশ কেন ভারতের বিভিন্ন জায়গায়ও এ দিনকে ঘিরে বিভিন্ন ধরণের উৎসব আয়োজন করা হয়। উৎসবের অংশ হিসেবে থাকে পিঠা খাওয়া, ঘুড়ি উড়ানো ইত্যাদি। সারাদিন ঘুড়ি উড়ানোব পরে সন্ধ্যায় পটকা ফুটিয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবের সমাপ্তি করে।
ভারতের বীরভূমের কেন্দুলী গ্রামে এই দিনটিকে ঘিরে ঐতিহ্যময় জয়দেব মেলা হয়। বাউল গান এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। একসময় বাংলাদেশের পুরান ঢাকার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাতে বেশি জমজমাট ভাবে উদযাপিত হতো পৌষসংক্রান্তি তথা সাকরাইন। শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গে-ারিয়া, লালবাগ ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে ছোট, বড় সকলেই মেতে উঠত এ উৎসবে। বিকেল বেলা এই সব এলাকায় আকাশে রঙ বেরঙের ঘুড়ি ওড়ে। ছাদে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়ানো হতো। অধিকাংশ সময়ে ভোঁ কাট্টা’র (ঘুড়ি কাটাকাটি) প্রতিযোগীতা চলতো। এখন তার সাথে যোগ হয়েছে ডিজে পার্টি, আতশ বাজি, ফানুস ইত্যাদি। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একজন ভদ্রলোক আক্ষেপের সাথে বললেন, এটা যদিও বাঙালী ঐতিহ্য কিন্তু বাংলা গানের কিছুইতো দেখি না। আগে এই অনুষ্ঠানে এত জৌলশও ছিল না। বিগত বছরে মিডিয়া ও বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর উৎসবটিকে যেভাবে প্রমোট করছেন, হয়তো এটি আগামি কয়েক বছরের মধ্যে সার্বজনীন উৎসবের রূপ নিবে।