শিক্ষার গুণগত মান রক্ষায় আসনসংখ্যা অবনমনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, সেখানে সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তারা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে চায়। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনর্নির্ধারিত আসনসংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা জানালেও ঠিক কতটি আসন তারা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়নি।
তবে প্রথম আলো (৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক খবরে বলা হচ্ছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে আসনসংখ্যা সাত হাজার থেকে কমিয়ে ছয় হাজার করা হবে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়াও জানাচ্ছে। ঠিক কোন পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করে দেশের উচ্চশিক্ষার প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিশদ বর্ণনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফুটে ওঠেনি। বরং এ ধরনের বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা হলেও ধূম্রজাল তৈরি হতে পারে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রভাবও পড়তে পারে।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠার পর থেকে যেখানে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে আসছে, সেখানে হঠাৎ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানো ক্রমবর্ধমান উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠতে পারে, তেমনি কেবল আসনসংখ্যা সীমিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গুণগত’ মানোন্নয়ন কতটা সাফল্য আসবে, তা নিয়ে সমালোচনা যৌক্তিক বলে মনে করছি।
ধারণা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোগত সক্ষমতার বাইরে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় আসনসংখ্যা বাড়ানোর চাপ হয়তো শিক্ষকেরা নিতে পারছেন না। সে জন্য আসনসংখ্যা কমিয়ে সেই চাপ থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজছেন তারা। কেবল আসনসংখ্যা কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের চিন্তা যতটা না মুখ্য, তার চেয়ে বেশ কিছু শক্তিশালী অনুষঙ্গ রয়েছে, যেগুলোর সংস্কার করা জরুরি। সেগুলো করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত ‘গুণগত’ শিক্ষার মান পাওয়া কখনোই সম্ভব হবে না।