আওয়ামী লীগের টানা ক্ষমতায় থাকার এক যুগ পূর্ণ হলো এই ডিসেম্বরে। এই বছরেই ছিল মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আওয়ামী লীগের জন্য বছরটি হতে পারত ভিন্ন রকম উদ্যাপনের। কিন্তু অভ্যন্তরীণ বিভেদ, স্ক্যান্ডাল, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত-প্রাণহানিতে বছরটা পার করল ক্ষমতাসীন দলটি।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড কার্যত বন্ধই হয়ে যায়। ২০২১ সালের শুরুটা হয় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার কথিত ‘সত্যবচন’ দিয়ে। নিজ দল, জাতীয় নির্বাচন, দলের সাংসদ এবং নিজের ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ পরিবারের সদস্যদের নানা অপকর্মের কথা বলে টানা তিন-চার মাস নোয়াখালীর রাজনীতিতে উত্তেজনা জিইয়ে রাখেন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘাতে দুজনের প্রাণহানি হয়। কাছাকাছি সময়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে নতুন বিতর্কের জন্ম দেন।
এভাবে বছরের প্রথম ভাগটা দলীয় বিভেদে কেটেছে। শেষ ভাগে আলোচনায় ছিল বিতর্ক, স্ক্যান্ডাল এবং নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনাগুলো। সর্বশেষ বড় ঘটনা হচ্ছে মুরাদ হাসানের প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ এবং দলের সব ধরনের পদ থেকে অব্যাহতি। খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য এবং একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে তুলে আনার হুমকির ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে আওয়ামী লীগকে। বিতর্ক চাপা দিতে মুরাদ হাসান কানাডায় পাড়ি দিতে গিয়ে সে দেশে ঢুকতে পারেননি। নানা বন্দর ঘুরে দেশে ফেরেন, যা মানুষের হাস্যরসের খোরাক হয়। এর বাইরে গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে অপসারণ, হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ ভুঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য লজ্জায় ফেলে আওয়ামী লীগকে।