বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে কয়েক মাস বাকি। এরপরে গঠিত হবে নতুন নির্বাচন কমিশন, যারা আগামী জাতীয় সংসদসহ পাঁচ বছর নতুন উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। কেমন হবে সেই নির্বাচন কমিশন? বা প্রধানসহ সেটির সদস্য কারা হবেন? বাংলাদেশে এ মুহূর্তে দুর্বলতম নাগরিক সমাজের একাংশ, কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তি ছাড়া বিষয়টি নিয়ে কারও মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। কী উপায়ে বা কোন পদ্ধতিতে কমিশনের সদস্যরা নিয়োজিত হবেন, তা নিয়ে নির্বাচনের প্রধান শরিক রাজনৈতিক দলসমূহ এবং ভোটারদেরও কোনো ভাবনা নেই। অবশ্য বিগত এক দশকে কথিত নির্বাচক কমিটির মাধ্যমে যে ধরনের নির্বাচন কমিশন আমরা পেয়েছি এবং সেসব কমিশনের মাধ্যমে আয়োজিত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার পর এ নিয়ে আগ্রহ না থাকারই কথা।
বাস্তবতা হচ্ছে, জনগণ বা সিংহভাগ ভোটার ভোট নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। যদিও নির্বাচন কমিশন সেটি মানতে রাজি নয়। তারা বরং মাঠ থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান দেখিয়ে গর্ববোধই করে। নির্বাচন ঘিরে শত অভিযোগ ও নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির তথ্যপ্রমাণাদি থাকলেও এর কোনোটিই মানতে রাজি নয় কমিশন। বিগত কিছু নির্বাচনে ১০০ শতাংশের বেশি পড়ার মতো ভোট জালিয়াতির প্রমাণ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। আইনের দোহাই দিয়ে সেসব অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এতগুলো বছরে এ ধরনের জালিয়াতি রোধে নির্বাচন কমিশনের যে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা নেয়নি। যেমন আরপিওকে আরও স্বচ্ছ এবং নিজেদের ক্ষমতাকে স্পষ্ট করা ও প্রয়োগের পথে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো দূর করার প্রয়াসও নেয়নি। জালিয়াতি ঠেকানো সহজ হতো, যদি নির্বাচন কমিশন আন্তরিক হতো। প্রয়োজন ছিল ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে নিরীক্ষণের ব্যবস্থা হাতে নেওয়া এবং প্রয়োজনে আইন সংযোজন করার উদ্যোগ।