'সামাজিক বনায়ন' প্রত্যয়টি শুরু থেকেই দেশের প্রকৃতি ও সংস্কৃতির ইতিহাসে গলার কাঁটা হয়ে আছে। প্রত্যয়টি প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সঙ্গে বেমানান। 'বনায়ন' মানে বন সৃজন, যা কৃত্রিমভাবে অসম্ভব। কারণ, বন এক প্রাকৃতিক বিবর্তনের মাধ্যমে বিকশিত বাস্তুতন্ত্র। মানুষ কোনোভাবেই বন সৃজন করতে পারে না। মানুষ যা করে তাহলো 'বাগান' বা উদ্যান। যেমন- বলধা, প্রেমকানন, রমনা, সোহরাওয়ার্দী। যখন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয় বিভিন্ন বাগান গড়ে তোলার জন্য তখন নিদারুণভাবে 'বনায়ন' শব্দটিও ব্যবহূত হয়। পাশাপাশি বনায়নের আগে 'সামাজিক' প্রত্যয়টির ব্যবহার এ কাজটিকে আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কারণ, বন একটি সামাজিক বাস্তুতন্ত্র। সব অরণ্য বাস্তুতন্ত্রে নানামুখী সমাজ আছে। সে বন্যপ্রাণের হোক, কি বনবাসী মানুষের হোক। অরণ্য তাই ঐতিহাসিকভাবেই এক অরণ্য-সমাজ ও সভ্যতাকে বিকশিত করে চলে।