নদী, সবুজ মাঠ, ফুল ও পাখির প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছিল প্রবল আকর্ষণ; যা তার লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীনে বারবার ধরা দিয়েছে।
কারাগারের ভেতরে বঙ্গবন্ধু বাগান করতেন। পরম মমতায় গাছের পরিচর্যা করতেন। শুস্ক মাটিতে সবুজের পরশ বুলাতেন। গাছে গাছে ফুল ফোটার দৃশ্য দেখার জন্য উৎসুক হয়ে থাকতেন। কারাগারের রোজনামচায় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, 'দুপুরের দিকে সূর্য মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারতে শুরু করছে। রৌদ্র একটু উঠবে বলে মনে হয়। বৃষ্টি আর ভালো লাগছে না। একটা উপকার হয়েছে আমার দুর্বার বাগানটার। ছোট মাঠটা সবুজ হয়ে উঠেছে। সবুজ ঘাসগুলি বাতাসের তালে তালে নাচতে থাকে। চমৎকার লাগে, যেই আসে আমার বাগানের দিকে, একবার না তাকিয়ে যেতে পারে না। বাজে গাছগুলি আমি নিজেই তুলে ফেলি। আগাছাগুলিকে আমার বড় ভয়, এগুলি না তুললে আসল গাছগুলি ধ্বংস হয়ে যাবে। যেমন আমাদের দেশের পরগাছা রাজনীতিবিদ- যারা সত্যিকার দেশপ্রেমিক তাদের ধ্বংস করে এবং করতে চেষ্টা করে। তাই পরগাছাকে আমার বড় ভয়। আমি লেগেই থাকি। কুলাতে না পারলে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনি।' বঙ্গবন্ধু কারাগারের বাইরেও একটি বিশাল বাগান সাজিয়েছিলেন- সেটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলটিকে তিনি তিল তিল ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। সুদীর্ঘ সেই ইতিহাস।