বাংলাদেশের সংগ্রামী শিল্পী ফকির আলমগীরের প্রয়াণ এদেশের সংস্কৃতিবান্ধব মানুষের জন্য গভীর শোক বয়ে এনেছে। কভিড-১৯ এর ছোবলে ইতিমধ্যে আরও অনেক সাহসী বিপ্লবী মানুষ অনন্তলোকে ফিরে গেছেন। আমরা এত দ্রুত তাকেও হারাব ভাবতে চাইনি। গণশিল্পী হিসেবে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। মেহনতি মানুষের জন্য গান করেছেন, লিখেছেন প্রবন্ধ, গড়ে তুলেছেন সংগঠন। সংগীতের সঙ্গে রাজনীতির যে সম্পর্ক রয়েছে, রয়েছে অধিকার আদায় ও সংগ্রামের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক, সেই পথকে অবলম্বন করে তিনি বাংলা গানের ধারায় নবযুগের সূচনা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পরবর্তীকালে বাংলায় পপ সংগীতের যে নতুন প্রেক্ষাপট রচিত হয় তা বাংলা গানের ধারায় নবযুগের সূচনা করে। প্রচলিত ও প্রথাসিদ্ধ সংগীতের বন্ধ্যত্বের ভেতর একদল শিল্পী ব্যান্ড সংগীতের আদলে মূলত যুক্ত করেছেন বিশ্বসংগীতের সঙ্গে বাংলার লোকসংগীতের ধারা। অর্থাৎ একদিকে আবহমানতা অন্যদিকে বাংলার জনবসতি, তাদের আবেগ, আকাক্সক্ষা, প্রেম ও বিজয় এবং বৈরী প্রকৃতি, দারিদ্র্য ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অকপটে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে গ্রামের সখিনা থেকে কৃষ্ণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, নূর হোসেন থেকে পল রোবসন সবাই বাংলা গানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। স্বাধীনতার পর যে ব্যান্ড সংগীত ও পপ সংগীতের অভিনবত্ব আশির দশককে প্লাবিত করেছিল পঞ্চপাণ্ডবের দুরন্ত অভিযাত্রায়, তারা হলেন আজম খান, ফিরোজ সাঁই, পিলু মোমতাজ, ফেরদৌস ওয়াহিদ এবং ফকির আলমগীর।