ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে আমি অপছন্দ করতাম। বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারব্যবস্থায় বুদ্ধিবৃত্তিক অনেক অপকর্ম তার মাথা থেকে এসেছে। নিঃসন্দেহে তিনি বিদ্যান। তবে বিদ্যান হলেও তিনি দুর্জন। আর দুর্জন বিদ্যান হলেও পরিত্যাজ্য। তাই আমি বরাবরই তাকে এড়িয়ে চলেছি। বেঁচে থাকতে তার নানা অপকর্ম নিয়ে ভূরি ভূরি লিখেছি। ব্যারিস্টার মওদুদের মৃত্যুতে আমি শোকার্ত হইনি। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কিছু লিখিনি বা শোকও জানাইনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দ-অপছন্দে কিছু যায় আসে না। আমি পছন্দ করি আর না করি, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে তাকে উপেক্ষা করা যাবে না। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তবে পঁচাত্তরের পর বারবার দলবদল করে এবং সামরিক শাসকদের বৈধতার বুদ্ধি দিয়ে রাজনীতিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ এক অবিশ্বাস্য রাজনৈতিক রেকর্ডের অধিকারী। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এবং ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে ঘনিষ্ঠ ছিলেন জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ারও। আসলে তিনি এস এ খালেকের বুদ্ধিজীবী ভার্সন। ব্যারিস্টার মওদুদ সব সময় সরকারি দল করেন। সরকার বদল হয়ে গেলে তার করার কিছু থাকে না। তবে তার এই রেকর্ডে ছেদ ঘটিয়েছেন শেখ হাসিনা। শেষ জীবনটা তাকে ক্ষমতার বাইরেই কাটাতে হয়েছে। উচ্ছেদ হতে হয়েছে বাড়ি থেকে।