মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রাজধানীর বাড়িওয়ালারা বিপাকে পড়েছেন। এমন অনেক বাড়িওয়ালা পাওয়া গেছে যাদের বাসায় দুটি ফ্ল্যাট ফাঁকা রয়েছে। শুধু রাজধানী নয়, এর আশপাশে সাভার এলাকা থেকে শুরু করে, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জের মতো এলাকাতেও এর প্রভাব পড়েছে।
করোনার কারণে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। কারও ব্যবসা চলছে না। কেউবা আবার ভয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। করোনার সময়ে বাড়ি ভাড়া মওকুফ কিংবা কমানোর দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য রাজধানী ছেড়ে গ্রামমুখী হচ্ছেন অনেকে। অনেকে আবার পরিবার-পরিজন গ্রামে রেখে নিজে মেসে উঠেছেন।
রাজধানী ও এর আশেপাশের বেশ কয়েকজন বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বাসা খুব বেশি একটা খালি থাকে না, কিন্তু এখন থাকছে। আবার অনেকে বড় ফ্ল্যাট ছেড়ে ছোট ফ্ল্যাটে উঠছেন।
উত্তর বাড্ডার আলীর মোড়ের পূর্বাঞ্চল সড়কের দুটি বাড়ির মালিক নোয়াখালীর মফিজ মিয়া। প্রায় ১০ বছর আগে বাড়ি দুটি করেন। প্রতি বাড়িতে ২৪টি করে ফ্ল্যাট। দুই রুমের ফ্ল্যাটগুলোর চাহিদা সবসময়ই বেশি। কোনো সময় ফাঁকা থাকত না। কিন্তু চলতি মাসে তার দুটি ফ্ল্যাট ভাড়া হয়নি। এর আগে এমনটি কখনও হয়নি বলে জানান তিনি।
মফিজ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাসায় টু লেট লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই ভাড়া হয়ে যেত। কারণ ঢাকায় এমন ছোট ফ্ল্যাট পাওয়া খুব মুশকিল। কিন্তু এই মাসে (জুলাই) দুটি ফ্ল্যাট ফাঁকা রয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছর সৌদিতে থেকে জমি কেনার পর ব্যাংক লোন নিয়ে বাড়ি দুটি করেছি। এজন্য দুশ্চিন্তায় আছি।’
রাজধানীর কাঁঠালবাগানের ঢালে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন গোলাম রব্বানী। তিনি দেশীয় একটি কোম্পানির ডেলিভারি ম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। কিন্তু মার্চ থেকে তার কাজ বন্ধ। তিন মাসের বেতন পাননি। বাধ্য হয়ে গ্রামে রেখে এসেছেন পরিবার। এখন একটি মেসে উঠেছেন। সেই বাসাটিও এখন ফাঁকা বলে জানান গোলাম রব্বানী।
শুধু ঢাকা নয়, এর পার্শ্ববর্তী এলাকা সাভারের অবস্থা আরও খারাপ। বিশেষ করে যেসব বাড়িতে পোশাক শ্রমিকরা ভাড়া থাকতেন, তার অনেকগুলোই এখন ফাঁকা।