হাওরের মেয়ে ডলি রানী সরকার। অনেক বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন তিনি। জীবনের শুরু থেকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন। দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা পড়াশোনা করে আজ তিনি সফল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ৩৮তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ডলি রানী সরকার।
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা গ্রামের কৃষক বাবার সন্তান ডলি রানী সরকার। নবম শ্রেণি পর্যন্ত বাবার সঙ্গে হাওরের মাঠে কৃষিকাজ করেছেন। বর্ষাকালে পড়াশোনা আর হেমন্তে বাবার সঙ্গে হাওরে ধান কাটা, ফসল লাগানোসহ সব ধরনের কাজে বাবাকে সহযোগিতা করেছেন ডলি। মূলত কৃষিজমি থেকেই শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম।
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী ছিলেন তিনি। শিক্ষাজীবনের শুরুতে ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার ঘাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মেধাবী হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শুরু থেকেই স্বপ্ন দেখতেন প্রাথমিকে বৃত্তি পাবেন ডলি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় বৃত্তি পাওয়ার সুবিধার জন্য গাইডবই কিনে দিয়েছিলেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুকুল। ওই শিক্ষকের কথা রেখেছেন ডলি, প্রাথমিকে পেয়েছেন বৃত্তি।
এরপর বংশীকুন্ডা মমিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ডলি। ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর তার বাবা অসুস্থ হন। এজন্য পরিবারে দুঃসময় চলে আসে তাদের। এ অবস্থায় সংসার চালানোর ভার পড়ে তার ওপর। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সেবা-যত্ন, জমিতে কৃষিকাজ ও কষ্ট করে সংসার চালানোর সব দায়িত্ব এসে পড়ে ডলির কাঁধে।