ভারতের সঙ্গে চীনের সীমান্ত উত্তেজনা এখন চরমে। এই পরিস্থিতিতে চীন কোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিলে তার কড়া জবাব দেওয়ার জন্য সব ধরনের স্বাধীনতা ভারতীয় বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। ভারতের দিল্লিভিত্তিক বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে গতকাল রোববার এই তথ্য জানানো হয়েছে। রাশিয়ায় যাওয়ার আগে চীন পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে এই নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
আজ সোমবার রাশিয়া সফরে যাবেন রাজনাথ সিং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের জয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে যোগ দেবেন রাজনাথ সিং। এর আগে গতকাল লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চলমান উত্তেজনা পরিস্থিতি নিয়ে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান এম এম নারবানে, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল করমবীর সিং ও বিমানবাহিনীর প্রধান আর কে এস ভাদুরিয়া।
সম্প্রতি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় চীনা সেনার সঙ্গে সংঘাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান নিহত এবং ৭৬ জন আহত হন। এরপর থেকেই উত্তেজনা বাড়ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার আঞ্চলিক পর্যায়ে চীন, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো এবং বৈঠক থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হলো।
ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, রাজনাথ সিংয়ের ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এলএসিতে উত্তেজনা বাড়াবে না ভারত, তবে যদি চীনের পক্ষ থেকে উত্তেজনা বাড়ানো হয়, তাহলে একই ভাষায় জবাব দেবে ভারত। বৈঠকে বাহিনীর প্রস্তুতি ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। রাশিয়ায় যাওয়ার আগে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলায় কড়া জবাব দেওয়ার নির্দেশ ভারত যে চীনের যেকোনো পদক্ষেপের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে, তা আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি বুঝে তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর এই জবাব দেওয়ার জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে ভারতের সেনা ও বিমানবাহিনী। ভারতের সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার। এই পুরো সীমান্তেই তীক্ষ্ণ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পাশাপাশি চীনের সেনাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সহযোগিতা করতে চান ট্রাম্প চীন ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা হ্রাসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি গত শনিবার বলেছেন, সাহায্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলছে। ওকলাহোমায় নিজের নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটা খুবই কঠিন সময়। আমরা চীনের সঙ্গে কথা বলছি, ভারতের সঙ্গে কথা বলছি। এই দুই দেশই বড় সমস্যায় পড়েছে। দুই পক্ষ সংঘাতে জড়িয়েছে, আমরা দেখব কী ঘটে। আমরা চেষ্টা করব তাদের সাহায্য করার।’