গত কয়েকমাস ধরে সফল একটি পরীক্ষা বা ট্রায়ালের পর ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের (এনএইচএস) চিকিৎসকদের এখন থেকেই গুরুতর কোভিড রোগীদের এই ওষুধ দিতে বলেছেন।
ব্রিটেনের প্রধান মেডিকেল অফিসার বলেছেন, “অতি সত্বর এই ওষুধ দেওয়া শুরু করতে হবে।“ তিনি বলেন, এর সরবরাহ নিয়ে কোনো সমস্যা হবেনা।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক পার্লামেন্টে বলেছেন, দেশে এই মুহূর্তে ২৪০,০০০ ডেক্সামেথাসোন মজুদ রয়েছে।
তিনি বলেন, “এই ওষুধ দিলেই কোভিড রোগী সেরে উঠবে তা নয়, তবে এখন পর্যন্ত এর চেয়ে সুসংবাদ আমাদের কাছে নেই।“
সোমবার (১৫ই জুন) ব্রিটেনের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮৫ জন কোভিড রোগী ভেন্টিলেটরে ছিলেন। সেইসাথে অক্সিজেন প্রয়োগে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আরো কয়েকশো রোগী।
এমন রোগীদের আজ থেকে হয়তো ডেক্সামেথাসোন দেওয়া শুরু হবে।
‘যুগান্তকারী আবিষ্কার‘
বিজ্ঞানীরা বলছেন ডেক্সামেথাসোন নামে সস্তা ও সহজলভ্য একটি ওষুধ করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীদের প্রয়োজন হয় অক্সিজেন চিকিৎসা। তাতে কাজ না হলে কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেবার জন্য ভেন্টিলেটর লাগাতে হয়।
এই উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের জন্যই ডেক্সামেথাসোন সাহায্য করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত এই ট্রায়ালে বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার গুরুতর রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
ট্রায়ালে দেখা গেছে, যেসব রোগী ভেন্টিলেটরে ছিলেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি এই ওষুধ নেবার ফলে ৪০% থেকে কমে ২৮%এ দাঁড়ায়।আর অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছিল এমন রোগীর বেরায় মৃত্যুর ঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামে।
অক্সফোর্ডের এই ওষুধের ট্রায়ালের প্রধান গবেষক অধ্যাপক মার্টিন ল্যানড্রে বলছেন এই পরীক্ষার ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ভেন্টিলেটরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এমন প্রতি আট জন রোগীর মধ্যে একজনের প্রাণ এই ওষুধ দিয়ে বাঁচানো সম্ভব।আর যেসব রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে তাদের প্রতি ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে একজনের জীবন এই ওষুধে বাঁচবে।