বাংলাদেশে শাবান মাস ২৯ দিনে হলে রমজান শুরু হবে ২৫ এপ্রিল, আর ৩০ দিনের হলে রমজান শুরু হবে ২৬ এপ্রিল। মধ্যপ্রাচ্যে এ তারিখ একদিন কমবেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রমজান মাসে মুসলমানরা এশার নামাজের পর বিতরের আগে অতিরিক্ত ২০ রাকাত নামাজ পড়ে থাকেন। যেটিকে তারাবির নামাজ বলা হয়। তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
অনেকে তারাবির নামাজ ছোট ছোট সূরা দিয়ে পড়েন, এটাকে বলা হয় সূরা তারাবি। আবার অনেক স্থানে তারাবির নামাজে পর্যায়ক্রমে পুরো কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এটাকে বলা হয় খতমে তারাবি।
বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা খতমে তারাবিতে অংশ নেওয়ার জন্য মসজিদগুলোতে ভিড় করেন। কিন্তু এবার অনেক দেশেই মসজিদে খতমে তারাবি হবে না। করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে অনেক দেশে মসজিদে নামাজ পড়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে মসজিদ বন্ধ করা না হলেও শুক্রবার ছাড়া অন্যান্য দিনে মসজিদে সর্বোচ্চ ৫ জনের নামাজ পড়ার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
করোনার বিস্তার ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সামাজিক দূরত্ব (মূলত শারীরিক দূরত্ব) মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। সংস্থাটির মতে, সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে একজন মানুষ থেকে অপর মানুষের ন্যূনতম দূরত্ব হওয়া উচিত ৩ ফুট। এটি ৬ ফুট হলে সবচেয়ে ভালো।
পবিত্র রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এ মাসে গুরুত্বের সঙ্গে খতমে তারাবি পড়া হয়, মসজিদগুলো মুখরিত হয় কোরআন তেলাওয়াতের সুরে। হাফেজরা কোরআন খতম করেন তারাবির নামাজে। হাফেজদের তেলাওয়াতে মুগ্ধ হয় সাধারণ মুসল্লি। বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক হাফেজ বিদেশেও যান তারাবির নামাজের ইমামতি করতে।
রমজান মাসে দেশের কওমি মাদরাসাগুলো বন্ধ থাকে। ছুটির অবসরে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী হাফেজরা দেশের মসজিদগুলোতে খণ্ডকালীন ইমামতি করেন। সারা বছর পড়াশোনার চাপে কাঙ্খিত পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতে না পারলেও রমজানের খতমে তারাবি হয়ে উঠে তাদের জন্য কোরআন তেলাওয়াত চর্চার বড় একটি মাধ্যম। এর মাধ্যমে হাফেজদের হিফজ মজবুত হয়, সেই সঙ্গে কিছু অর্থও পাওয়া যা। যা দিয়ে পরের বছর মাদরাসায় ভর্তি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মসজিদের সংখ্যা দুই লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টি। এসব মসজিদের প্রায় সবগুলোতেই খতমে তারাবি অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে প্রায় ৫ লাখের বেশি হাফেজে কোরআন খতমে তারাবি জামাতে ইমামতি করেন।
সাধারণত শবে বরাতে মসজিদগুলোতে তারাবির জন্য খণ্ডকালীন ইমাম নিয়োগের কাজটি সম্পন্ন হয়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে শবে বরাতে মসজিদগুলো মুসল্লি শূন্য ছিলো। তাই সেভাবে তারাবির ইমাম নিয়োগ দেওয়া যায়নি। ফলে অধিকাংশ মসজিদ কর্তৃপক্ষ আগের বছরের ইমামকে তারাবির জন্য বলে রেখেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো- এবার কি বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে খতমে তারাবির জামাত অনুষ্ঠিত হবে?