দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে কাশ্মীরের যাত্রা শুরু
প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
গতকাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরের দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছে। রাজ্যের মর্যাদা বিলোপ করে গত ৫ই আগস্ট সরকার দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে তা রাজ্য পুনর্গঠন বিল আকারে সংসদে অনুমোদিতও হয়েছে। মিলেছে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনও। দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। এদিনই আমলা গিরিশচন্দ্র মুর্মু শ্রীনগরে এবং আর কে মাথুর লাদাখে উপরাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিয়েছেন। নতুন ব্যবস্থায় দু’টি অঞ্চলের পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। জমির বিষয়টি দেখবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত সরকার। তিন মাস আগে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রথমেই সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটানো হয়েছে। এর পরে রাজ্যের মর্যাদা তুলে দিয়ে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আগামী দিনে কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হবে। তবে সরকারের এই সব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে সেখানকার মানুষ। দীর্ঘ তিন মাস ধরে রাজ্যের সব রাজনৈতিক নেতাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চালু রয়েছে নানা বিধিনিষেধ। বন্ধ ইন্টারনেট ব্যবস্থাও। ভারতের কোনো রাজনৈতিক নেতাকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে গতকাল বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের সঙ্গে লড়ছিল জম্মু-কাশ্মীর। ৩৭০ ধারা বিলোপের পর সেই সমস্যা চিরতরে মিটতে চলেছে। এবার শুধুই উন্নয়ন হবে। তবে ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রিত সফরে কাশ্মীর গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৩ সদেস্যের প্রতিনিধিদলটি বুধবার সফর অসম্পূর্ণ রেখেই কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আগেই অবশ্য আরো চার প্রতিনিধি কাশ্মীর সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন। বাকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা যাবার বেলায় বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ কাশ্মীরের এক চরম সমস্যা। তার জন্য পাকিস্তানকেই দায়ী করেছেন তারা। প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য পোলান্ড থেকে নির্বাচিত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিশার্ড সারনেস্কি বলেছেন, আমাদের মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের একাংশে কাশ্মীর নিয়ে একতরফা তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে। দেশে ফিরে আমরা যা দেখলাম সে কথা জানাবো। ফ্রান্সের অঁরি মালোসের মতে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা নিয়ে ভারতকে নিশানা করা উচিত নয়। ভারতের বিরোধী দলগুলো অবশ্য এই বিদেশি দলটির সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এই প্রতিনিধিদলটিতে দক্ষিণপন্থি এবং নাৎসীবাদী রাজনীতিকদেরই প্রাধান্য ছিল। ফলে গতকাল থেকে ভারতের রাজ্যসংখ্যা কমে দাঁড়ালো ২৮টিতে। আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯টিতে।