গতকাল মানবজমিনে প্রকাশিত ‘শেরে বাংলায় প্রিন্স রাজত্ব’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কামরান শাহিদ প্রিন্স। প্রতিবাদপত্রে তিনি বলেন, প্রতিবেদনের প্রথমেই বলা হয়েছে ‘এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে নিজের দখলে নিয়েছেন অন্যের জমি, বাড়ি। সরকারি জমিও তার হাত থেকে রেহায় পায়নি’। বিষয়টি সর্বৈব মিথ্যা। শাপলা হাউজিং এলাকায় চার কাঠার একটি বাড়ি এবং মোল্লা পাড়ার পশ্চিম কাফরুলের আমানউল্লাহর ১১২৪ নম্বর প্লটে প্রায় আট কাঠা জমির ওপর নির্মাণ করা বাড়ি দখলে নেয়ার যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা সত্য নয়। এ ধরনের কোনো বাড়ি আমার দখলে নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে আমার দুটো প্রতিষ্ঠান ৮০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমি জালিয়াতি কিভাবে করলাম তার কোন উল্লেখ প্রতিবেদনে নেই। প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, তার কিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সেই ঋণ নিয়ে দুদকে অভিযোগ করেছিল, যার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এরপর বলা হয়েছে আমি ‘সন্ত্রাস ও মাদকের গডফাদার হাজী নুর মোহাম্মদের ঘনিষ্ট ছিলাম’। প্রশ্ন হলো নুর মোহাম্মদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তাকে সভাপতি বানানোর এখতিয়ার আমার না। যুবলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে একজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে যেভাবে সম্পর্ক থাকে, এর বাইরে আর কোন সম্পর্ক আমার ছিল না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমি পঙ্গু হাসপাতাল দখলে করে সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করি। যা একটি ভয়ংকর মিথ্যা কথা। বর্তমান ই টেন্ডারের যুগে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের কোন সুযোগ নেই। তবে এটা সত্য যে আমি পঙ্গু ও যক্ষ্মা হাসপাতালে ঠিকাদারের কাজ করি। এই কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন নিয়মের ব্যতয় ঘটেনি। আমি কখনো কাউকে টেন্ডার জমা দিতে বাধাও দেইনি। বলা হয়েছে, আমি হাসপাতালের প্রশাসনিক ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে আমার অফিসে নির্যাতন করেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বলা হয়েছে, আমি শ্যামলীতে একটি হিন্দু পরিবারের বাড়ি দখলের চেষ্টা করেছি। এই এলাকার প্রতিটি মানুষ আমাকে চেনে। দখলের চেষ্টার ওই সময়ে কোন মানুষ কি আমাকে দেখেছে? প্রতিবাদপত্রে প্রিন্স বলেন, তিনি গা ঢাকা দেননি। নিজের বাসায়ই আছেন। নিয়মিত অফিস করেন। প্রতিবেদনে তার গা-ঢাকা দেয়ার যে তথ্য এসেছে তা সত্য নয়। প্রতিবেদকের বক্তব্য: সাংবাদিকতার সকল নিয়মনীতি মেনেই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। সরজমিনে গিয়ে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে যেসকল অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার উপর ভিত্তি করেই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। যেসব ভুক্তভোগী বক্তব্য দিয়েছেন তার রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ৮০ কোটি টাকা ঋণের বিষয়ে দুদকেও অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগের সূত্র ধরেই সংবাদে তথ্য দেয়া হয়েছে। হিন্দুবাড়ি দখলের ব্যাপারে ভুক্তভোগীরাই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া ঘটনার সময়ের এ বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল। যার তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের আগে বক্তব্য নেয়ার জন্য কামরান শহিদ প্রিন্সের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার বক্তব্য নেয়ার জন্য দুটি ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়।