শরীরের ওজন কমে গেছে প্রায় পাঁচ কেজি। চোখেমুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। প্রায় দেড় মাস পর এমন অবস্থায় হাজির জাতীয় দলের ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। অথচ তার খেলার কথা ছিল গেল মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে। এমনকি সুযোগ ছিল ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলারও। কিন্তু হয়নি। কেন হলো তার সঙ্গে এমনটা! কেনই বা ক্রিকেট ছেড়ে মাঠ থেকে দূরে ছিলেন তিনি? গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন নিজের হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার কারণ। মূলত পরিবারের বড় বিপদের কারণেই তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে। তার এক বছরের একমাত্র সন্তান শোয়াইবের উপর দিয়ে গেছে বড় ঝড়। প্রথমে ডেঙ্গু পরে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ইমরুলের শিশুপুত্র। নিজের বিপদের মুহূর্তগুলো নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর ভালো হয়ে গেলো। কিন্তু আবার সমস্যা শুরু হয়েছিল। তাই ফের যেতে হলো। এবার চিকিৎসকেরা বলছেন, আশা করি আর হবে না। সে অনুযায়ী ওষুধ দিয়েছে। শুরুতে আসলে ডেঙ্গু হয়েছিল। তা থেকে আরও দুটো রোগ হয়। আমাদের উপমহাদেশে এমন রোগ বিরল। সাধারণত মালয়েশিয়ার দিকে বেশি হয়। এ কারণেই বাংলাদেশে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারছিল না কী রোগ হয়েছে বাচ্চাটার।’ইমরুল আগেই জানিয়েছিলেন তার কাছে ক্রিকেটের চেয়ে পরিবার আগে। তাই সুযোগ থাকা সত্বেও জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। আর আপদকালে নিজেকেও ফিট রাখতে পারননি তিনি। ইমরুল বলেন, ‘মানসিকভাবে ঠিক না থাকলে আসলে শারীরিকভাবে ফিট থাকা যায় না। যার ওপর দিয়ে যায় সে এটা ভালো বোঝে।’ তবে সুখবর হলো এখন তার শিশুপুত্র সুস্থ আছে। তাই এই মুহূর্তে তার লক্ষ্য শুধু মাঠে ফেরা। তিনি বলেন, ‘গত এক-দেড় মাস সম্পূর্ণ ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম। বাচ্চার অসুস্থতার কারণে কোনোভাবেই এদিকে ফোকাস করতে পারছিলাম না। এখন আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছে সে। চেষ্টা করবো শতভাগ সময় দিয়ে ক্রিকেটে ফেরার।’ সব শেষ নিউজিল্যান্ড সফরে দলে ছিলেন ইমরুল। তারপর আর কোনো সিরিজে তার খেলা হয়নি। এই মাসেই ভারত সফর। সেখানে রয়েছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। সেই লক্ষ্যেই এখন নিজেকে ফিট করে জাতীয় দলে সুযোগের অপেক্ষা তার। তিনি বলেন, ‘আশা নিয়েই সবাই সামনে এগিয়ে যায়। আমিও সেই আশা নিয়েই অপেক্ষায়। যদি সামনে সুযোগ আসে, অবশ্যই সুযোগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। মাঝে একটা সুযোগ এসেছিল, দুর্ভাগ্য আমার ছেলের অসুস্থতার কারণে খেলতে পারলাম না। তবে সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। সামনে যদি আবার সুযোগ আসে অবশ্যই চেষ্টা করবো শতভাগ দেয়ার।’ নিজেকে ফিট করে খেলতে হবে জাতীয় ক্রিকেট লীগে (্এনসিএলে)। দিতে হবে ফিটনেস পরীক্ষাও। ফিটনেস নিয়ে ইমরুল বলেন, ‘ফিটনেস টেস্ট কিন্তু আমাদের জন্য নতুন কিছু না। প্রতিটা ক্যাম্প শুরুর আগে টেস্ট দিয়েই আমরা নির্বাচনে আসি। যারা জাতীয় দলের বাইরে আছে তাদের জন্য হয়তো একটু চ্যালেঞ্জিং। এটা অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো। প্রতিযোগিতা বাড়বে, অনুপ্রেরণা আসবে যারা সিনিয়র প্লেয়ার আছে তাদের জন্য। আমরাও চেষ্টা করবো নিজেদের ফিটনেসের সেই লেভেলটা ধরে রাখতে’।