সরকার দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুভ বুদ্ধপুর্ণিমা ২০১৯ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সবদিক থেকে সরকার বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ড. মোশাররফ বলেন, কৃষকরা তাদের ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা। এ কারণে তাদের পাকা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলছে। এটা ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই অশুভ সংকেত। কিন্তু সরকার এটা পাশ- কাটিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল বিদেশে রপ্তানি করার চেষ্টা করছে। অপরদিকে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছে। এখানে আমাদের প্রশ্ন, চাল তো মজুদ আছে। তাহলে আমদানি করতে হবে কেন? আর যেখানে কৃষক পাকা ধান পুড়িয়ে ফেলছে, সেখানে কৃষকের কাছ থেকে যদি একটু বেশি দামে ধান কেনা হতো তাহলে তো কৃষক ধান পুড়িয়ে দিতো না। খন্দকার মোশাররফ বলেন, গুঞ্জন আছে বাংলাদেশ থেকে যারা টাকা বিদেশে পাঁচার করে দিতে চাচ্ছেন, তাদের সুযোগ করে দেয়ার জন্য চাল আমদানির ঘটনা ঘটছে। সুতরাং ধান মজুদ থাকার পরও কেন চাল আমদানি করা হচ্ছে? কারণ এখানে টাকা পাঁচারের ষড়যন্ত্র আছে। আর যারা এটা করছে, তারা সরকারি দল সমর্থিত ব্যবসায়ী। খোঁজ নিয়ে দেখেন। বিএনপি সংকটে- সরকারের মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি সংকটে নয়। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া। তার ইশারায় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে আমরা স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দল পরিচালনা করছি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ নয়। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার নেই। সুতরাং একটি দেশে যদি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার না থাকে তাহলে ধর্ম-কর্মের অধিকার কি থাকে? তাই আজকে ধর্ম-কর্মের অধিকারও নেই। কারণ আজকে বাংলাদেশকে ধর্মহীন রাষ্ট্র করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সমপ্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভাইরাল হওয়া একটি ফোনালাপের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি সংযত না হয় তাহলে তার মা সারাজীবন কারাগারে থাকবে। একথা বলার পরে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কোনো আইনের কারণে নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং বর্তমান সরকার দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখেছে। বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জন গোমেজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অমলেন্দু বিকাশ অপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবতি, কেন্দ্রীয় নেতা বিজন কান্তি সরকার, এ.বি.এম আবদুস সাত্তার, সুশীল বড়ুয়া, সুভাষ চন্দ্র চাকমা, প্রধান চন্দ্র চাকমা প্রমুখ।