বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এই আদেশের ফলে মিন্নির কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তারা আইনজীবীরা। গতকাল চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত নো অর্ডার দেন। আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেএড আই খান পান্না ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি এএম আমিন উদ্দীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারোয়ার কাজল ও মো. সারোয়ার হোসাইন বাপ্পী। গতকাল ১লা সেপ্টেম্বর মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এদিকে, হাইকোর্টে দেয়া মিন্নির জামিন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে বহাল থাকার পর লিভ টু আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেন, মিন্নির জামিন-সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের রায়টি হাতে না পাওয়ায় আমরা চেম্বার জজ আদালতে ওই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করেছিলাম। কিন্তু চেম্বার আদালত নো অর্ডার দিয়েছেন। তবে এরই মধ্যে ১লা সেপ্টেম্বর মিন্নির জামিনের বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশ হওয়ায় আমরা এখন নিয়মিত আপিল আবেদন (লিভ টু আপিল) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি নোটও জমা দিয়েছি ।এর আগে গত ২৯শে আগস্ট আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আদেশ দেন। জামিনকালীন সময়ে তাকে তার বাবা মোজাম্মেল হকের জিম্মায় থাকার নির্দেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে গণমাধ্যমে কোনো ধরনের কথা না বলতেও নির্দেশ দেয়া হয় মিন্নিকে। ওইদিন মিন্নির জামিনের পর সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মিন্নির জামিনে আমরা মর্মাহত। এই জামিনের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করার সিন্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, মিন্নির বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ ছিলো। সেগুলো আদালতে উপস্থাপন করেছি। নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নি ঘটনার আগে ৭ বার ও পরে ৫ বার ফোনালাপও হয়েছে। তবে জামিন আবেদনে খুশি মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, আদালত আমাদের যুক্তিগুলি যথাযথ মনে করে মিন্নিকে জামিন দিয়েছে। জামিনে থাকাবস্থায় তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। এর আগে, গত ৮ই আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মিন্নির জামিন আবেদন ফেরত দেন। হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে রুল জারির ইচ্ছা প্রকাশ করলে মিন্নির আইনজীবীরা জামিন আবেদন ফেরত নেন। গত ২৬শে জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।