এক সময় অতি গরিব ছিলেন। সংসারে অভাব ছিল। দিনমজুরি করেছেন। আবার ভ্যান-রিকশা চালিয়েছেন। এ সব কাজ করেই উল্লাপাড়ার মো. গহির আলী আয়ের টাকায় সংসার চালিয়েছেন। এখন তার জীবন বদলে গেছে। মৌচাষেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি এখন সফল মৌ খামারি। কঠোর পরিশ্রমে সফলতা এসেছে। এর পেছনে এনজিও প্রতিষ্ঠান বাসা তাকে সফলতার দিকে এগিয়ে দিয়েছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ভাটবেড়া গ্রামের মো. গহির আলী ২০১০ সালে দিনমজুরি, ভ্যান-রিকশা চালানো ছেড়ে বাক্সে মৌমাছি পালন ও মধু উৎপাদনে জড়িত হন। তিনি প্রথম মৌ খামারি সুরমান আলীর পরামর্শ ও অনুপ্রেরণায় মৌ খামার থেকে মধু উৎপাদন শুরু করেন। প্রথম ২০টি মৌ বাক্স নিয়ে তিনি শুরু করেন। এখান থেকেই তার সফলতা মিলতে থাকে। মৌ বাক্সের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সঙ্গে আয় বাড়তে থাকে। প্রায় দুই বছর আগে গহির আলী কম্ব ফাউন্ডেশন সিট মেশিন কিনেছেন। এ মেশিনে তৈরি সিএফসিট নিজ খামারে ব্যবহারের পাশাপাশি অন্য খামারির কাছেও বিক্রি করে থাকেন বলে জানান। এখন তার ২শ’ মৌ বাক্স রয়েছে। এদিকে মো. গহির আলী তিন বছর আগে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল এডভান্সমেন্ট (বাসা) এনজিও থেকে ‘টেকসই মৌচাষ উন্নয়ন ও মধু বিপণনের মাধ্যমে মৌচাষিদের আয় বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক ভ্যালু চেইন প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নেন। এ প্রশিক্ষণে রানী উৎপাদন হাইজেনিক পরীক্ষা, মৌ কলানী ব্যবস্থাপনা, পোলেন উৎপাদন বিষয়ে হাতে কলমে শেখানো হয়। মো. গহির আলী আরো জানান তিনি এর পেছনে কঠোর শ্রম দিয়েছেন বলেই সফলতা পেয়েছেন। মৌ খামারগড়তে কেউ আগ্রহী হলে তাকে অবশ্যই সব দিক থেকে সহযোগিতা করবেন। এনজিও বাসার উন্নয়ন ফ্যাসিলিটেটর মো. আল আমিন জানান, এ এনজিও থেকে মধু চাষিদের স্বাবলম্বী হতে উন্নত প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ, নতুন প্রযুক্তির সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে। এরই মধ্যে গোটা উপজেলার ৫০ জন মৌ খামারিকে এবং ৫২৫ জন সরিষা চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান চাষিরা প্রশিক্ষণ মোতাবেক সরিষা চাষ করলে ফলনের হার অনেক বেশি হয়। এনজিওটি থেকে মধু বাজারজাতকরণে খামারিদেরকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেয়া হয়।