বৈষম্যকে নিয়ে ভাবতে হলে আগে বৈষম্যের পর্যালোচনা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশের পরিসংখ্যান কী? বাংলাদেশের পরিসংখ্যানের বড় সমস্যা হচ্ছে, এর ওপর মানুষের আস্থা নেই। যে পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে বৈষম্য নিরসন ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করা হবে, সেই পরিসংখ্যানই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। এখন আমাদের সঠিক পরিসংখ্যান নিশ্চিত করতে হবে। কেননা এর ওপর ভিত্তি করেই যেকোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈষম্যকে অ্যাড্রেস করতে হলে প্রথমে অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে।
অর্থাৎ অর্থনীতিতে গণতন্ত্রের প্রতিফলন থাকতে হবে। বিগত সময়ে দেশের অর্থনীতি কিছু লোকের কাছে কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণে বিশাল আয়বৈষম্য ও অলিগার্ক শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ করতে পারিনি। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ না করে জিডিপির আকার ও প্রবৃদ্ধির আকার দিয়ে দেশের মানুষের কোনো কাজে আসবে না। যে বৈষম্যের কথা বলছি, সেই বৈষম্য নিরসন করতে হলে অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ ও সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এর অনুপস্থিতির কারণে অর্থনীতিতে প্রবেশের যার সম্ভাবনা আছে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ সে পাচ্ছে না। অর্থাৎ এর অনুপস্থিতির কারণে ব্যাংক খাত এমনকি সরকারের নীতিতে এর প্রতিফলন ঘটবে না।
দেশের নীতিগুলো লক্ষ করলে দেখা যাবে, যেমন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ব্যবসা-বাণিজ্য দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যাদের পছন্দ হয়েছে তাদেরই ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটি তো বাজার অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য নয়। এর দায়ভার এখন পুরো জাতিকে, পুরো অর্থনীতি এমনকি প্রতিটি নাগরিককে বহন করতে হচ্ছে। বর্তমানে এর দু-তিনটি প্রভাব পড়ছে। এর একটি, অর্থনীতিতে ক্ষরণ হচ্ছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর। তাদের প্রত্যেকের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের সম্পদ একটি গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সারা দেশের মানুষ এর দায় ভোগ করছে।