আবার ট্রাম্প— পরবর্তী চার বছর হবে উথাল-পাতাল

বিডি নিউজ ২৪ সালেহ উদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫৯

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। পরের চার বছর হবে খুবই উৎকট ও উত্তাল। সকলকে তাদের সিটবেল্ট ভালো করে বেঁধে নিতে হবে, ট্রাম্পের সঙ্গে উথাল-পাতাল যাত্রার জন্য। ট্রাম্পকে ঘিরে রয়েছে অনেক নেতিবাচকতা। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র তার হাতে কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে বার বার কথা উঠেছে। তার খামখেয়ালি অভ্যাসগুলো অনেকভাবে সমালোচিত হয়েছে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। এত প্রতিকূলতা নিয়েও ট্রাম্প নির্বাচিত হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। তিনি আগেও প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সুতরাং তার কর্মকাণ্ডের ধরন ও খামখেয়ালিপনা বিশ্ববাসীর পরিচিত।


যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের সুযোগ ছিল ইতিহাস সৃষ্টি করার, কমলা হ্যারিসকে ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ রায় দিয়েছে, তারা এখনো একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে প্রস্তুত নয়। তারা বেছে নিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্পকে, যিনি নিজেকে একজন শক্তিমান পুরুষ বলে দম্ভ করে বেড়ান।


কেন হারলেন কমলা হ্যারিস?


প্রার্থী হিসাবে কমলা ছিলেন উচ্ছল এবং খুবই উজ্জীবিত। নির্বাচনি প্রচারণায় তিনি কোনো ভুল করেননি। হিলারির তুলনায় তিনি ছিলেন অনেক অনেক উজ্জ্বল ও কর্মদীপ্ত। তারপরও পরাজিত হলেন। অবশই ‘নারী-প্রতিবন্ধকতা’ বা গ্লাস সিলিং একটা ফ্যাক্টর। কিন্তু এর বাইরেও অনেক ফ্যাক্টর আছে যা তার পক্ষে কাজ করেনি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল, রিপাবলিকানদের ল্যাটিনো (হিস্পানিক) সমর্থন। যা অন্যবারের তুলনায় প্রতিটা অঙ্গরাজ্যে অনেক বেড়ে গিয়েছে এবার। যদিও তরুণী ভোটাররা কমলাকে অনেক বেশি সমর্থন দিয়েছেন কিন্তু তরুণেরা কমলাকে আশানুরূপ সমর্থন দেয়নি। শ্রমিক শ্রেণি আবার ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছে বেশি কারণ ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে চীনের আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দুৰ্ভাগ্যবশত ডেমোক্র্যাটরা শুধু ট্রাম্পের খামখেয়ালি আচরণ নিয়ে হুশিয়ার করে প্রচারণা চালিয়েছেন, কিন্তু তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিগুলো যে জনগণের সমর্থন পাচ্ছে, তা যাচাই করেনি। তরুণদের ভোট হারাবার প্রধান কারণ হলো, গাজা যুদ্ধবিরোধী মনোভাব। কমলা বাইডেনকে ডিঙিয়ে গাজা যুদ্ধের সমালোচনা করতে পারেননি বা করতে চাননি। শুধু হোয়াইট হাউজ নয়, ডেমোক্র্যাটরা সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হারিয়েছে। এইসব নিয়ে সামনে অনেক বিশ্লেষণ হবে। তবে এখন সবাইকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মেনে এবং মান্য করে চলতে হবে।



নির্বাচনের দিন


যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের দিন সাধারণত কোথাও তেমন উত্তেজনা দেখা যায় না। সকলেই নিজ নিজ মতে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যায়। কোনো হৈ-হুল্লোড় নেই, নির্বাচনি কেন্দ্রগুলো ঘুরেও নির্বাচনের উত্তাপ বা গতি-প্রকৃতি খুব বোঝা যায় না। নির্বাচনের দিন কেউ জনমত জরিপ নিয়ে খুব মাথা ঘামায় না, কারণ নির্বাচনের দিন ভোটারের মত কদাচিৎ পরিবর্তন হয়।


যক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন আমি বার বার চোখ রাখি স্টকমার্কেটের দিকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকেই স্টকমার্কেট বাড়ছে বিরাট উচ্চতায়। স্টকমার্কেট একটা ভালো ব্যারোমিটার, যুক্তরাষ্টের অনেক সাধারণ লোকও সঞ্চয় করে স্টকে। কী পরিমাণ বিশ্বাস তাদের নিজেদের দেশের বুনিয়াদে। আমরা যারা বলছি ট্রাম্প আসলে দুনিয়ায় গজব নেমে আসবে বা নারী কি পারবেন এত বড় দেশ চালাতে, তাদের মুখে ছাই দিয়ে নির্বাচনের সকাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা বলছেন, আমি পরোয়া করি না যে-ই প্রেসিডেন্ট হউন। এই বিশ্বাস নিয়ে আমেরিকানরা এত বছর দুই পার্টি সিস্টেমে তাদের গণতন্ত্রকে পাহারা দিয়েছে। সবকিছু তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি সবসময়। কিন্তু পরোয়া নেই— মাত্র তো চার বছর। নতুন লোককে ভোট দিয়ে আনবে পরের নির্বাচনে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য, কেউই ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে পারবে না একদিনও বেশি। বাংলাদেশে আমরা কি এই সৌন্দর্য্যের স্পর্শ পাবো?


ভোট গণনা ও টিভি কভারেজ


মার্কিন জনগণ নির্বাচনের ফলাফল পেয়ে থাকে মূলত চারটি জাতীয় টিভি নেটওয়ার্ক থেকে— সিএনএন, এনবিসি, এবিসি এবং ফক্স। রিপাবলিকান সমর্থকদের কাছে ফক্স চ্যানেলই বেশি প্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় দেশ, এখানে সব অঙ্গরাজ্যের ভোটার ফলাফল সংগ্রহ করে খুব অল্প সময়ে ভোটের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে প্রতি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পাবেন তার পূর্বাভাস দেওয়া খুবই ব্যয়বহুল। তাই সকল চ্যানেল একত্রিত হয়ে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করে। তাই সব চ্যানেল ভোট গণনা ও পূর্বাভাসের তথ্য একসঙ্গে পেয়ে থাকে। তাই কে জয়ী হতে যাচ্ছেন মোটামুটি একই সময়ে সব চ্যানেল তা প্রচার করে। লাল ও নীল অঙ্গরাজ্যগুলিতে কে কোথায় জয়ী হতে যাচ্ছেন তার পূর্বাভাস দশ-বিশ শতাংশ ভোট গণনার সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা দেওয়া হয়। লাল-নীলের বাইরের রাজ্যগুলোর জয়ী ঘোষণা করতে অনেক বেশি শতাংশ ভোট গণনার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিটা অঙ্গরাজ্যে জয়ী ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে (কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া) জয়ী পেয়ে যান ওই রাজ্যের সকল নির্বাচনি ইলেক্টোরাল ভোট। এভাবে যিনি সর্বপ্রথম ২৭০ ভোট পাবেন তাকেই (সম্ভাব্য) জয়ী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে টিভি চ্যানেলগুলো। যদিও এটা সরকারি ফলাফল নয়। প্রতিটা চ্যানেলের নিজস্ব পণ্ডিত আছে, তারা নিজেদের মতো করে ভোটের তথ্য পর্যালোচনা করেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us