কাশ্মীর নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজের পর তিনি চেয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরকে প্রথমবারের মতো কোনো হিন্দু মুখ্যমন্ত্রী উপহার দিতে। স্বপ্ন সাকার করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তিনি।
জম্মুজুড়ে প্রচার চলেছে কোনো ডোগরার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা। উপত্যকার জনতা তা ব্যর্থ করে দিল। এই অতৃপ্তি নিশ্চিতভাবেই তাঁকে বহুদিন হতাশাচ্ছন্ন রাখবে।
জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার ভোট হলো ১০ বছর পর। এ সময়ে ঝিলম দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। পিডিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি চার বছর রাজত্ব করেছে। তারপর জোট ভেঙে রাজ্যটাকেই ভেঙে দিলেন মোদি। লাদাখকে আলাদা করে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার পাশাপাশি কেড়ে নিলেন জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধান প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা। খারিজ করলেন সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ।
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ না দিলে আরও কত দিন সেখানে কেন্দ্রের শাসন চলত, কেউ জানে না। যেমন এখনো জানা নেই, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা কবে পাবে। কবে প্রতিষ্ঠা পাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পূর্ণ হুকুম।
ভাবী মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, রাজ্যের মর্যাদা ফেরতের দাবিই হবে নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম প্রস্তাব। যদিও তা যে শর্তসাপেক্ষ, সে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন বিজেপি নেতা রাম মাধব, যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ভোট পরিচালনার। তিনি বলেছেন, রাজ্যের মর্যাদা ফেরতের আগে কেন্দ্রকে নিশ্চিত হতে হবে, সেই সব ভয়ংকর দিন ভূস্বর্গে আর ফেরত আসবে না। কে জানে, ভোট হলেও এটা দিল্লি-শ্রীনগরের নতুন রাজনৈতিক ঠোকাঠুকি পর্ব হতে চলেছে কি না।
ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও কংগ্রেসের জোট জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ুক, নিশ্চিতভাবেই মোদি তা চাননি। চাননি বলেই বিধানসভার বহর বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলোর সীমানা নতুনভাবে এঁকে হিন্দুপ্রধান জম্মুতে বাড়ানো হয়েছে ৬টি আসন, মুসলমানপ্রধান কাশ্মীরে ১টি। ওখানেই তিনি থেমে থাকেননি। আইন করে উপরাজ্যপালকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বিধানসভায় পাঁচজনকে মনোনীত করার, যাঁদের ভোটাধিকারও থাকবে।