আমরা আর সিঁদুরে মেঘ দেখতে চাই না

যুগান্তর অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১২

গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা প্রায় এক মাস ধরে সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। সরকার ছাত্রদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। মাননীয় আদালত কোটা সুবিধা সংস্কারের আদেশ দিয়েছিলেন; কিন্তু এরপরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামেনি। কোটা সংস্কার আন্দোলন এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ লাভ করে। পরবর্তীকালে শিক্ষার্থীরা সরকার পতনের একদফা দাবিতে সোচ্চার হয়। আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে, সরকার তা দমনের জন্য শক্তি প্রয়োগ করে। এতে বেশকিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন। ফলে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের ধারাবাহিক শাসনের অবসান ঘটে।


শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটলে পরবর্তী তিন দিন দেশ ছিল কার্যত সরকারশূন্য। এরপর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে যারা দায়িত্বভার লাভ করেছেন, তাদের প্রায় সবাই ভালো মানুষ এবং তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অনাচারের তেমন কোনো অভিযোগ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের দৃশ্যত কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। ফলে প্রশাসনিক কাজে তারা কতটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তারা কেউই রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। শিক্ষার্থীরাই তাদের এ দায়িত্বে বসিয়েছে। বিষয়টি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও স্বীকার করেছেন।



অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিশেষ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এখনো সরকারের মেয়াদ দুমাস পূর্ণ হয়নি। তাই এ সরকার সম্পর্কে মূল্যায়ন করার সময় এখনো আসেনি। কথায় বলে, প্রভাতের সূর্য দেখলেই বলে দেওয়া যায় দিনটি কেমন যাবে। ড. ইউনূস একটি ছোট প্রতিনিধিদল নিয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিনিধিদলে থাকা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, সম্ভবত ভারতও বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী। এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, যাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়, তারা একটি বিশেষ ঘরানার মানুষ। পুঁজিবাদী দেশের সমর্থন বা সহযোগিতা ছাড়া কারও পক্ষে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব নয়। তৃতীয় বিশ্ব থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন ব্যক্তি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, এটি বিশাল ব্যাপার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ড. ইউনূসের ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান আছে অনেক আগে থেকেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দেবে, এটাই স্বাভাবিক। আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করবে, এটি মোটামুটি নিশ্চিত।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংবিধান নতুন করে লেখার কথা বলা হচ্ছে। মতিভ্রম না হলে কেউ সংবিধান নতুন করে লেখার কথা বলতে পারেন না। আমাদের মনে রাখতে হবে, ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এ সংবিধান পেয়েছি। এটি সম্পূর্ণ পালটে দেওয়া এত সহজ নয়। সংবিধানের কোনো ধারা বা অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, পরিমার্জন করা যেতে পারে, তাই বলে পুরো সংবিধান নতুন করে লেখার দুঃসাহস দেখানো ঠিক হবে না। কেউ একজন হয়তো বলতে পারে, আমি তাজমহল তৈরি করব। কিন্তু আমাদের দেখতে হবে তাজমহল তৈরি করার মতো আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সামর্থ্য তার আছে কিনা। এ আর আম্বেদকার ভারতীয় জাতীয় সংবিধানের জনক। তার বিকল্প এখনো কেউ আসেনি। সংবিধান রচনা করা এত সহজ নয়। ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা। তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমাদের ভিন্নমত থাকতে পারে; কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে তার অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। এক সময় বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ দুজন মানুষের নামে পরিচিত ছিল। একজন হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যজন ড. কামাল হোসেন। এখন আরও একজন মানুষ যোগ হয়েছেন, তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কেউ একজন বললেন, আমি সংবিধান প্রণয়ন করে দেব, আর সঙ্গে সঙ্গে সংবিধান প্রণীত হয়ে গেল, বিষয়টি এতটা সহজ নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us