গত ৫ আগস্ট সকালেও ‘নাটোরের রাজপথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ব্যস্ত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম। ওই দিন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে আগে তিনি আত্মগোপনে যান। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শহরের কান্দিভিটুয়া মহল্লায় ‘জান্নাতি প্যালেস’ নামে তাঁর প্রাসাদসম বাড়িতে হামলা চালান। ভাঙচুর, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগে ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়িটির পরিণতি দেখতে এখন প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেখানে আসেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি সব উপকরণ আর আসবাবে সাজানো যে বাড়ি ছিল গত ১৫ বছরে শফিকুল ইসলামের গড়া সম্পদের একটি ‘নিদর্শন’।
নাটোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে ২০০৮ সালে জনপ্রতিনিধির খাতায় নাম লেখান শফিকুল ইসলাম। শিমুল নামেই বেশি পরিচিত এই আওয়ামী লীগ নেতা ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য বনে যান। এরপর টানা তিনবার সংসদ সদস্য হন। ১৫ বছরে তিনি গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। দেশে-বিদেশে নিজের ও স্ত্রীর নামে প্রাসাদসম বাড়ি করে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা বলছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন শফিকুল। নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে তিনি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের মামলা–হামলার মাধ্যমে হয়রানি করেছেন। নিজ দলের নেতা-কর্মীরাও নির্যাতন থেকে বাদ যাননি। নেতা-কর্মীদের কোণঠাসা করে দলীয় পদে বসিয়েছেন নিকটাত্মীয় ও বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর অঢেল অবৈধ সম্পদের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করেছে। পাশাপাশি শফিকুল ও তাঁর স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউ।