দেশে বর্তমানে ‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২’ চালু আছে, যেটিকে আর যাই বলা যাক কোনোভাবেই দেশের শিল্প খাতকে একটি টেকসই মৌলিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যসম্পন্ন দলিল হিসেবে অভিহিত করা চলে না। কথাটি যে দেশে সম্প্রতি সরকার বদল হয়েছে বলেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বলা, মোটেও তা নয়। বরং ১৯৯১ সাল থেকে এ লেখক রাষ্ট্রের শিল্পনীতিগুলোর ধারাবাহিক নানা অস্বস্তিকর দুর্বলতা নিয়ে কথা বলে আসছেন এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞতাভিত্তিক নানা অভিমত জনসমক্ষে ও নীতিনির্ধারকদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
এমনকি সদ্যবিদায়ী সরকারের একনায়কতান্ত্রিকতার ভীতিকর অবস্থার মধ্যেও তার সে বক্তব্য তুলে ধরার কাজটি অব্যাহত ছিল (দ্রষ্টব্য: বণিক বার্তা: ১১ অক্টোবর ২০২২, ১৮ জুলাই ২০২২ ও ০৭ ডিসেম্বর ২০২১; সমকাল: ১০ মে ২০২৪ ইত্যাদি)। কিন্তু এরূপ চুনোপুঁটি মানুষের এসব বক্তব্য রাষ্ট্রীয় মসনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ক্ষমতাবানদের কাছে কখনোই গুরুত্ব পায়নি। ফলে ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রণীত প্রতিটি শিল্প নীতিতেই গুরুতর মানহীনতা, অসংগতি ও দুর্বলতা বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও সেসবের প্রতিবিধানে কখনো কোনোরূপ সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, বরং এ সময়কার প্রতিটি শিল্পনীতি তার পূর্ববর্তী শিল্পনীতি থেকে আরো অধিক মানহীনতার দিকে এগিয়েছ এবং এর সবচেয়ে বড় কারণ সম্ভবত এই যে, পেশাদারত্বকে উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রণীত এসব নীতি প্রণয়নকালে এর প্রণেতারা ধরেই নিয়েছেন, নীতিতে যা কিছুই লেখা থাকুক না কেন এ খাত তার ঐতিহ্য অনুযায়ী আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতি অনুযায়ীই চলবে, যেমনটি আইন থাকা সত্ত্বেও দেশ চলে আইনকে উপেক্ষা করে ক্ষমতাবানদের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী।