বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার এবং চিকিৎসার জন্য তাঁর মা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগের কথা বলেছেন দলটির নেতারা। তবে তারেক রহমানের দেশে ফেরার এবং খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার দিন এখনো ঠিক হয়নি। বিএনপির নেতারা বলছেন, দুটি বিষয়েই তাঁদের প্রস্তুতি আছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেদিন রাতেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছিলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তাঁরা সব ব্যবস্থা নিয়েছেন।
গত এক মাসে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, কারও কারও সাজা মওকুফ করা হয়েছে। বিদেশ থেকেও ফিরেছেন কেউ কেউ। বিএনপির নেতা-কর্মীরা চান, তারেক রহমান দেশে ফিরে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। তবে দলীয় সূত্র বলছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতার পাশাপাশি অন্য কিছু বিষয়ও বিবেচনা করতে হচ্ছে। তিনি দেশে ফেরার জন্য কোন সময়কে উপযুক্ত মনে করছেন, এ বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দ্রুততম সময়ে তারেক রহমান দেশে আসুন, দল সেটা চায়। এখানে কিছু মামলা-মোকদ্দমার ব্যাপার আছে। আইনজীবীরা বিষয়টি দেখছেন। এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও চেষ্টা থাকবে বলে তিনি জানান।
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। কারাগার থেকে মুক্তির পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে যান। ১৬ বছর ধরে তিনি সেখানে থেকে দল চালাচ্ছেন। বিএনপির আইনজীবীরা বলছেন, এক-এগারোর পর থেকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অন্তত ৮৪টি মামলা করা হয়। এগুলোর বেশির ভাগই মানহানির। ইতিমধ্যে মানহানির ১৯টি মামলা খারিজ হয়েছে। তবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাঁর যাবজ্জীবন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ পাঁচটি মামলায় সাজা হয়েছে।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা তিনি আইনিভাবেই মোকাবিলা করবেন। এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাঁকে (তারেক রহমান) নির্যাতন করা হয়েছিল। তাই চিকিৎসার বিষয় আছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয়ও আছে। উপযুক্ত সময়ে তিনি দেশে আসবেন।