নির্বাচনের আগের বছরে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বেশি শুল্ক ছাড় দিয়েছিল সদ্য সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। ব্যবসায়ীদের খুশি করতে এ শুল্ক ছাড়া দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদনেই এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগের বছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক বছরে এত শুল্ক ছাড় আর কখনোই দেওয়া হয়নি।
চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের আগের বছরে মূলত ব্যবসায়ী সমাজের সমর্থন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন খাতে শুল্ক ও কর ছাড় দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করেন এনবিআরের শুল্ক কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শুল্ক-কর ছাড় কমানোর শর্ত রয়েছে। এই বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের শর্ত হিসেবে কর ছাড় কমাতে বলেছে। সংস্থাটি মনে করে, শুল্ক-কর ছাড় যৌক্তিক করা প্রয়োজন। শুল্ক ও কর ছাড় যৌক্তিক করা হলে স্থানীয় উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়বে।
আইএমএফের সেই শর্ত পূরণ করতেই গত তিন বছরে যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেটির হিসাব করেছে এনবিআর। এর ভিত্তিতে এনবিআরের শুল্ক বিভাগ সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। এতে দেখা যায়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩৩ হাজার ৭২৯ কোটি টাকার শুল্ক ছাড়া দেওয়া হয়, যা আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে শুল্ক ছাড়ের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ২২৪ কোটি টাকা। সেটি ছিল তার আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। সেবার সব মিলিয়ে ২৩ হাজার ৩ কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়।