নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সংস্কারের সময় দিতে হবে

প্রথম আলো আসিফ নজরুল প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৭

আপনি নাগরিক সমাজের মানুষ ছিলেন। মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, আইনের শাসন, রাজনীতি, বিচারালয় ইত্যাদি বিষয়ে আপনি ছিলেন সরকারের সমালোচক। এখন নিজেই সরকারে। নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে কী বলবেন?


আসিফ নজরুল: আমি বিভিন্ন সরকারের সমালোচনা করেছি ৩০ বছর ধরে। আর সরকারে আছি ৩০ দিন। সরকারের নানা নেতিবাচক কাজের সমালোচনা যতটা সহজে করতে পারতাম, নতুন দায়িত্ব পালন করার কাজটি ততটা সহজ হচ্ছে না। কারণ, আমার অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে একটা কথা বলতে পারি, মানুষের নিয়ত যদি সৎ হয়, দেশপ্রেম থাকে, ইচ্ছাশক্তি থাকে, তাহলে যেকোনো কাজ করা সম্ভব। বিশ্বাস করি, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে আমি সরকারের কাজও খুব স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারব। আরেকটি দিক হলো, বিগত ১৫ বছরে সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার মাধ্যমে এবং অবাধ দুর্নীতি, অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া ও দলীয়করণের মাধ্যমে এমন একটি শোচনীয় পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কাজ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং।

সরকারের এক মাস হলো। এই সময়ে সরকারের কোন কাজগুলোকে ভালো বলবেন? দেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে, কোন কোন ঘটনাকে আপনার অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে হয়?


আসিফ নজরুল: আমি মনে করি, এটা জনগণের সরকার, এই আস্থা তৈরি করতে পারাটাই এই সরকারের প্রথম ভালো কাজ। বিগত সরকারের আচরণ ছিল মানুষের প্রতি প্রভুসুলভ। আমরা জনগণের কাছে অল্প হলেও এই ধারণা দিতে পেরেছি যে এটা আপনার সরকার, আপনাকে সেবা দিতে এসেছে। আপনি এই সরকারের যেকোনো সমালোচনা যখন ইচ্ছা করতে পারেন। এই মুক্তির পরিবেশ তৈরি করা গেছে। বৈষম্য ও বঞ্চনা দূর করতে সরকার বেশ কিছু কাজ করেছে। যেটা বাইরে থেকে ততটা বোঝা যাবে না। যেমন রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদবঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, জনমনে সেই আস্থা সরকার তৈরি করতে পেরেছে। ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিগত সরকারের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু মিথ্যা মামলাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনতে, ঋণখেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে, পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনতে প্রাথমিক যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সরকার তা করতে পেরেছে। মানুষকে স্বপ্ন দেখার সাহস কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। রাজধানীতে সভা-সমাবেশ হচ্ছে, সেমিনার হচ্ছে। মানুষ কথা বলছে। নানা প্রস্তাব আসছে। এমন একটি দেশই আমরা চেয়েছিলাম।



কত বছর পর আমরা তা পেলাম। মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক রীতি মেনে চলার কিছু কাজ করা এবং গুমবিরোধী জাতিসংঘের সনদে সই করা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গুম বিষয়ে কমিশনও গঠিত হয়েছে।


একটা বিষয় বাইরে থেকে বোঝা যাবে না। সেটি হলো, এই সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা ছিল। বিচারিক অভ্যুত্থান, আনসারদের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা, শ্রম খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা ইত্যাদি প্রতিরোধ করা গেছে। এর মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনাও ঘটেছে। যত্রতত্র মামলার ঘটনা ঘটছে। মামলায় আগের সরকারের মতো ঢালাও অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনা ঘটেছে।


যত্রতত্র মামলা ও ঢালাও অভিযোগ বিষয়ে সমালোচনা আছে। সরকারের পদক্ষেপ কী?


আসিফ নজরুল: আমরা অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখেছি, মামলা নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যেহেতু আগের সরকারের সময়ে আদালত ও পুলিশকে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছিল, ঘৃণার পাত্রে পরিণত করা হয়েছিল, সেহেতু চাপের মুখে তাঁরা নৈতিক মনোবল নিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। এখন ইচ্ছা না থাকলেও ঢালাও অভিযোগের মামলাগুলো নিতে হচ্ছে। সদিচ্ছা থাকার পরও আদালত প্রাঙ্গণে আক্রমণ ঠেকাতে পুলিশ ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা এসব মোকাবিলার উপায় বের করার চেষ্টা করছি। যেমন আদালত প্রাঙ্গণে হামলা ঠেকাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মামলার শুনানি খুব ভোরে বা আনপ্রেডিক্টেবল (অনুমান করা যায় না) সময়ে করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। এর কারণে হামলা পরের দিকে বন্ধ করা গেছে। মামলার ক্ষেত্রে একটি চিন্তা হলো, এজাহার নেওয়ার আগে প্রাথমিক তদন্ত করা হবে। সে ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে, এজাহার মানেই গ্রেপ্তার নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us