গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতেই রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে নাখোশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জামায়াত ইসলামীসহ শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক দলগুলো।
শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারাও হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কথা বলছেন। এখন পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। একইসঙ্গে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।
এ পরিস্থিতিতে হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানো নিয়ে চাপ বাড়ছে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন উঠছে হাসিনার ভারত অবস্থান নিয়ে।
এমন আবহে গতকাল ভারতীয় সংবাদ সংস্থার পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার কথা জানিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে দিল্লির সেফ হাউজে বসে যে সব নির্দেশনা পাঠাচ্ছেন হাসিনা, তাতে বিরক্ত প্রকাশ করেন তিনি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অন্তবর্তীকালীন সরকার চাইলে কি ভারত হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে?এ নিয়ে দোলাচলে ঢাকার রাজনৈতিক মহল। বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে অনেকে মনে করছে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
তবে ‘দ্য কনভারসেশন’ গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, বন্দি বিনিময় চুক্তিতে একটি বিষয় উল্লেখ আছে। সেটি হলো রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হলে কাউকে প্রত্যর্পণ করা যাবে না। আর এ বিষয়টি কাজে লাগিয়ে ভারত হাসিনাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে।
আবার এই চুক্তিতেই উল্লেখ আছে হত্যাচেষ্টা, হত্যা, অপহরণ ও হত্যায় উস্কানি দেওয়া অপরাধগুলো রাজনৈতিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হবে না। হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা করা হয়েছে তার প্রায় সবগুলোই এই ধারায় পড়েছে।