উত্তর-দক্ষিণে ছয় কদম। আর পূর্ব-পশ্চিমে চার কদম। এই হলো একটি কক্ষের আকার। ছাদ অনেক উঁচুতে। সেখানে সারাক্ষণ জ্বলে থাকে একটি বাতি। একটি ছোট খাটে বিছানা পাতা। পাশেই প্রস্রাব করার জন্য প্লাস্টিকের দুটি পাত্র রাখা। দেয়ালে দেয়ালে খোদাই করে নানা লেখা। কেউ লিখেছে পরিবারের ফোন নম্বর। খোঁজ জানানোর আকুতি। কেউ দাগ দিয়ে দিয়ে হিসাব করেছে বন্দিদশার দিনপঞ্জি।
এমন একটি ঘরেই ৯৪ দিন কাটানোর কথা জানিয়েছেন সাবেক সেনাসদস্য মো. মুকুল হোসেন। তিনি বলেছেন, কেন তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, কেন রাখা হয়েছিল অমন ঘরে, তা আজও তিনি জানেন না। সরকার পরিবর্তনের পর ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে তিনি এসেছেন প্রথম আলোয়।
১৩ আগস্ট কথা হয় মুকুল হোসেনের সঙ্গে। বেশ কিছু কাগজপত্রও নিয়ে এসেছেন তিনি। এতে দেখা যায়, স্বামীকে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ ডিবি কার্যালয় ও ১০ মার্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর আবেদন করেছিলেন মুকুলের স্ত্রী জিয়াসমিন আরা। এ বিষয়ে ‘ডিবি পরিচয়ে সাবেক সেনাসদস্যকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ১০ মার্চ। ওই বছরের ১৮ মার্চ র্যাব সদর দপ্তরেও আবেদন করেন জিয়াসমিন। ‘নিখোঁজের তিন মাস পর থানায় দিল র্যাব’ শিরোনামে প্রথম আলোয় আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ওই বছরের ১৫ মে। কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন মুকুল। তাঁর ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয় ওই ডায়েরিতে। ওই ডায়েরিতে উল্লিখিত বিবরণ ও মুকুল হোসেনের কথায় এ ঘটনার আদ্যোপান্ত উঠে এসেছে।