ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল রাতে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব নিয়েছে। নতুন সরকারকে আমরা স্বাগত জানাই। সহিংস গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দেশ কার্যত সরকারবিহীন হয়ে পড়ে। গতকাল নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে সেই শূন্যতা পূরণ হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ এক অনিশ্চিত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেল।
বাংলাদেশের এক ক্রান্তিকালে দায়িত্ব নেওয়া নতুন সরকারকে নিঃসন্দেহে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দীর্ঘ স্বৈরশাসনে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে অকার্যকর হয়েছে, সেগুলোকে সংস্কার করে কার্যকর করার কাজটি সহজ নয়। তা ছাড়া এই সরকারের কাছে সব মহলের প্রত্যাশাও থাকবে অনেক বেশি। যথাযথ পরিকল্পনা ও প্রাধান্য ঠিক করে তাঁরা সেই কাজগুলো নিশ্চয় করবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া এবং পুলিশ ও প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল ঢাকায় ফিরে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা তাঁর প্রথম কাজ বলে উল্লেখ করেছেন। কারও ওপর কোনো হামলা না করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে, এ কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ধর্ম–গোত্র রক্ষা করা আমাদের কাজ। প্রতিটি মানুষ আমাদের ভাই। বিশৃঙ্খলা অগ্রগতির বড় শত্রু।’
প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, সেটা যথার্থ বলে মনে করি। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে না আনতে পারলে সরকারের কোনো পদক্ষেপই ফলপ্রসূ হবে না। একই সঙ্গে দল-মতনির্বিশেষে জনগণ ও সব রাজনৈতিক নেতৃত্বের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারকে কাজ করে যেতে হবে। দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার কাজটিও একই সঙ্গে শুরু করতে হবে।