সবাই যেখানে সংস্কার চায়, সেখানে এত রক্ত কেন

প্রথম আলো আনিসুল হক প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৪২

একটা লেখা লিখেছিলাম। সেই লেখাটা সম্পাদনার জন্য জমা দেব, এই সময় খবর আসতে লাগল মৃত্যুর। রংপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে আসতে লাগল মৃত্যুর খবর। এরপর কী লিখব! আহমদ ছফা বলেছিলেন, একজন মানুষের অপমৃত্যুতেও আকাশ ভেঙে পড়া উচিত। আমাদের ছয়টা আকাশ ১৬ জুলাই ২০২৪ ভেঙে পড়েছে।


কেন এত হানাহানি? কেন এত মৃত্যু?


এটা সহজেই এড়ানো যেত। শুভবুদ্ধি প্রয়োগ করা উচিত ছিল, কিন্তু প্রয়োগ করা হলো দমন-নিপীড়নের পথ। অনেক দেরি হয়েছে। আর দেরি নয়। আজকেই যদি সরকার ঘোষণা দেয়, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হলো, কমিশন গঠন করে দেওয়া হলো। তাহলে আজই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মীমাংসার পথে দেরি হয়ে গেছে বলে কোনো কথা নেই, এখনই মীমাংসার সময়।
রক্তপাতের আগে ১৬ জুলাই সকালে যে লেখাটা লিখেছিলাম, তা আগে আপনাদের উদ্দেশে তুলে ধরি।


কোটাবিরোধীরা কোটা তুলে দিতে বলছেন না, তাঁদের দাবি যৌক্তিক কোটা সংস্কার। সরকারও কোটাপ্রথার পক্ষে নয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল তো সরকারই করেছে। হাইকোর্টের আপিল বিভাগ এক মাসের জন্য হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন। তার মানে এই মুহূর্তে কোটা নেই। এরপর শুনানি হবে। বিচার বিভাগ তাঁদের সুচিন্তিত রায় দেবেন।


আমরা ধারণা, সবাই কোটাপদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার চান। এই ব্যাপারটা বুঝিয়ে বললেই তো হয়।


একটা পর্যবেক্ষণ বলি। দেশের ছাত্রসমাজের বেশির ভাগই কোটাবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে। তাদের একজনের ওপরে আক্রমণ হলে সেই ব্যথা সবার বুকেই বাজে। সরকার এবং সরকারি ছাত্রসংগঠন কেন নিজেদের অজনপ্রিয় করার পথ বেছে নিচ্ছে, এইটা আমাদের বুঝে আসে না।


২০১৮ সালের আন্দোলনের মুখে সব কোটা তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। অনগ্রসর অংশের জন্য কোটা দরকার আছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮–এর দফা (৪)–এ বলা হয়েছে, নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হতে এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না, অপর দিকে অনুচ্ছেদ ২৯–এর দফা (৩) (ক)-এ বলা হয়েছে, এ অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারে, সে উদ্দেশ্যে তাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না।


আমাদের সময়ে বুয়েটে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় উপজাতিদের জন্য কোটা বরাদ্দ ছিল, নারীদের জন্য ছিল না। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় নারী কোটা ছিল। এসব কোটা কোনো অসন্তোষ তৈরি করেনি। এ ধরনের কোটায় কারও আপত্তি থাকার কথা নয়।


মুক্তিযোদ্ধা কোটার যৌক্তিক একটা সংস্কার দরকার। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনো জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর কারণে চাকরি পেতে দেখলে যদি সম্মান পান, সেই সুযোগ তিনি পেতে পারেন, কিন্তু এটাও একটা যৌক্তিক পরিমাণে হতে হবে। কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে কেউ একটু উফ্‌ বললেও আমার খুব খারাপ লাগে। আমি মুক্তিযোদ্ধা দেখলে স্যালুট দিই, পায়ে ধরে সালাম করি। তাঁরা আমাদের দেশ দিয়েছেন। সুবেদার ওয়াহাব বীর বিক্রমকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর রণক্ষেত্রগুলো দেখতে গিয়েছিোম ১৯৯৫ সালে। তিনি যতবার আমাদের অফিসে আসতেন, আমি তাঁর ব্যাগ বহন করতাম।


শিক্ষার্থীদের মুখে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ শোনা দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু নেতাদের ভুল কথা, ভুল আচরণ, দুর্নীতি, অগণতান্ত্রিক আচরণের ঢাল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহারের প্রবণতার কারণে এটা আমাদের শুনতে হলো। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা রাজাকার নন, এটা বোঝাতেই তাঁরা বিক্ষোভে নেমেছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us