শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনো সমাধান নয়

প্রথম আলো সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৮

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এর আগে মঙ্গলবার দেশব্যাপী সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ছয়জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শ। বুধবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতা ঘটেছে। আমরা প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেছেন।


সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তারা এসব পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের যুক্তি হলো, শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ঢুকে নাশকতা করছে। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, সরকার কেন তাদের ভাষায় রাজনৈতিক শক্তির অনুপ্রবেশের আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কোটার বিষয়ে সমঝোতা করল না?


আমাদের ধারণা, সরকার ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া লাখ লাখ তরুণের শক্তি ও সাহস অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। নীতিনির্ধারকেরা শুরু থেকে আদালতের দোহাই দিয়ে এলেও শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করেছেন, যা পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে নিয়ে গেছে।


বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত গায়েবানা জানাজায় বাধা দিয়েই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্ষান্ত থাকেনি, তারা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসছাড়া করতে অসংখ্য কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এটা কেবল অগ্রহণযোগ্য নয়, নিন্দনীয়। কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি আবাসিক হলগুলোও দ্রুততম সময়ে ছেড়ে যেতে বলেছে। কোনো শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা যদি আক্রান্ত হন, বিপদে পড়েন, তার দায় কে নেবে? আবাসিক হলগুলোতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


আমরা সব ধরনের জবরদস্তির বিরোধী। আন্দোলন প্রতিরোধের নামে সরকার–সমর্থক হেলমেট বাহিনীর হকিস্টিক নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া যেমন অত্যন্ত গর্হিত কাজ, তেমনি ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর কিছু আন্দোলনকারীর আক্রমণের ঘটনাও কাম্য নয়। দুই সপ্তাহ ধরে কোটা সংস্কারের পক্ষে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছিল নির্বিকার। আমরা তখনই তাদের তৎপর হতে দেখলাম, যখন সরকার সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিল। এর মানে হচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।


সরকার যদি মনে করে কোটা সংস্কারের দাবি অযৌক্তিক নয়, তাহলে কেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন মহা অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হলো? আন্দোলন মোকাবিলা করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বন্ধ করা কিংবা সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার কোনো কাজের কথা নয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষতিটা যে কত বেশি, সেটাও সরকারকে অনুধাবন করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us